গরম চা
– অঞ্জনা গোড়িয়া
ঠকঠক করে কাঁপছে। প্রচন্ড শীত। চারিদিক কুয়াশায় ঘেরা। রাজার সকালে স্কুল। কিছুতেই খাবে না। হর্লিক্সের গ্লাস নিয়ে ছুটোছুটি করছে মা। লক্ষ্মী সোনা ছেলে। এইটুকু চুমুক দিলেই তুমি যা চাইব দেব। স্কুলের দেরী হয়ে যাবে সোনা, খেয়ে নাও। রাজা হরলিক্স খেতে পছন্দই করে না। মা ও শুনবে না! এই শীতে এটুকু না খেলে হয় সোনা?
পাশের ঘরের শুয়ে বৃদ্ধ ঠাকুরদা। এখন অবশ্য গ্যান্ডপা বা দাদুই বলে সবাই। রাজা অবশ্য দাদুই বলে।
শতছিন্ন একটা সোয়টার গায়ে। কোনক্রমে মুখটা বাড়িয়ে বলল, বৌমা,একটু গরম চা দেবে? বড্ড শীত আজ।
রাজার মা, মুখ খিঁচিয়ে বলে উঠল, দেখছেন রাজাকে খাওয়াতে পাচ্ছি না। স্কুলে যাওয়ার দেরী হয়ে যাচ্ছে। এখনি চা খাওয়ার সখ হল? যত দিন যাচ্ছে তত ভীমরতি হচ্ছে আপনার? চুপ করে শুয়ে থাকুন। আগে ওকে খাইয়ে, স্কুলে দিয়ে আসি ।
বৃদ্ধ দাদু, চুপচাপ শুয়ে পড়ল। সারা শরীর তখন কাঁপছে ।
ছোট্ট রাজা কেমন শান্ত হয়ে গেল। হরলিক্স এর গ্লাসটা হাতে তুলে নিল। দাও মা, খেয়ে নিচ্ছি।
এবার থেকে রোজ খাব। মায়ের মন খুব খুশি। গ্লাস হাতে নিয়ে দাদুর কাছে এল। এই নাও দাদু তোমার গরম চা। এবার থেকে রোজ সকালে এটাই তোমার চা।