না লেখা চিঠি
-সঞ্চিতা রায়
স্নিগ্ধ , এত বছর ধরে মনের যে অনুভূতিগুলো ছিল,একান্তই আমার অধীন, সে কেন যে আজ শব্দে শব্দে ধরা দিতে চাইছ, কেন যে বাঁধনহারা হতে চাইছে জানি না রে! আমার না বলা কথাগুলো আজ বহুবছর পর চিঠির পাতায় শব্দের মালা হয়ে ধরা দিতে চাইছে,তাই তো তোকে লিখছি। জানিস সেই ছোট্ট থেকে তোর উপর কেন জানিনা আমার অদ্ভূত এক অধিকার বোধ ছিল। মনে হ‘ত তুই সবার আগে আমার বন্ধু পরে অন্যদের। এখন ভাবলে বড্ড হাসি পায়। একসঙ্গে খেলা করতে করতে, পড়তে পড়তে এই অধিকার বোধ যে কবে কখন ভালোলাগায় পরিণত হয়ে যায়, তাও ভালো করে মনে নেই। ভালোলাগার পথ ধরে ঠিক কতটা হাঁটলে ভালোবাসা হয় রে! ধূর সেসব বোঝার বয়স ছিল নাকি তখন। সবই তো কিশোর বয়সের অবেগ প্রবণতা। শুধু তুই খেলতে খেলতে পড়ে গিয়ে আঘাত পেলে খুব মন খারাপ হ‘ত। আর তুই ভালো ছেলে ছিলি বলে সচরাচর বকা খেতিস না, কিন্তু কোনো কারণে তুই বকা খেলে সারাদিনের জন্য মনটা আমার খারাপ হয়ে যেতো। এই অনুভূতিটাকে কী ভালোবাসা বলে নাকি রে?কেন যে দূরে গিয়ে বন্ধুদের দুষ্টুমির মধ্যে শুধু তোকে খুঁজতাম কে জানে? কিন্তু নবম শ্রেণীতে তোর হৃদয় জুড়ে অন্য কারুর উপস্থিতি দেখেও মনকে অদ্ভূত ঔদাসীন্য দিয়ে ভরিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। মনে হ‘ত আমার বন্ধু যেন ভালো থাকে, হ্যাঁ ওর যাকে ভালো লাগে তাকে পেয়েই ভালো থাক। ভালোবাসা বোধহয় আশ্চর্য নরম আর সুন্দর হয় তাই না রে? ত্যাগের আরেক নামই তো ভালোবাসা। আর আমার ওই মিষ্টি অনুভূতির নাম যদি ভালোবাসাও হয়ে থাকে তো ভালোবাসাকে খাঁচাবন্দী করায় আমার বিশ্বাস নেই। আমার ভালোবাসা তাই ডানা মেলুক অনন্ত আকাশে। তুই খুউউউউব ভালো থাক তোর ভালোলাগা আর ভালোবাসাকে নিয়ে। তোর ছোট বেলার বন্ধু অঙ্কিতা।