বাংলার দুর্গা
– সঞ্জয় গায়েন
এবার বৃষ্টি ভালো হয়েছে। জলাতেই বুক সমান জল। ধানগাছগুলো বাঁচার জন্য তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কোনোরকমে। খালেতে তো মাটির তল পাওয়া যাবে না। তাই সাঁতরে সাঁতরেই কলমী শাক তুলছে দুগ্গা। পীচরাস্তায় একটা কালো স্করপিও গাড়ী এসে দাঁড়ালো। হাঁটুর একটু নীচে পর্যন্ত ঝুল এমন প্যান্ট আর পাতলা গেঞ্জি পরা একটা লোক আর জিনস্ প্যান্ট ও হাফ হাতা জামা পরা একটি মেয়ে বাইরে এল। লোকটার সাথে ক্যামেরা। মেয়েটির হাতে মাইক্রোফোন।
ও দিভাই, দিভাই… শুনছেন… মেয়েটি দুগ্গা কে ডাকছে।
দুগ্গা মাথা তুলে তাকাতেই মেয়েটি আবার বলল, আমরা কলকাতা থেকে আসছি। টিভির জন্য ছবি তুলি। তোমার ছবি তুলবো।
ও মা, সে কি কতা! গায়েতে বেলাউজ নেই! সব দেকা যাচ্চে। ওনারা এইচেন ছবি নিতে! দূর অ পোরামুকি! দুগ্গা খেদিয়ে দেয় ওদের।
কিন্তু ওরাও সাত জায়গায় ঘোরা পার্টি। কোন্ রোগের কি ওষুধ ভালো করেই জানে।
মেয়েটি হাসিমুখে বলে, ও দিভাই শুনবে তো। ছবি তুলতে দিলে পাঁচশো টাকা দেব।
পরের মাসে। বাংলার দুর্গা প্রতিযোগিতায় ওই মেয়েটির তোলা ভিডিও ফার্স্ট হয়। টিভিতে দেখাচ্ছে। পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কারের চেক হাতে মেয়েটি ওর ছবি তৈরির গল্প শোনাচ্ছে। আর দুগ্গা নিজেকে টিভিতে দেখতে দেখতে গজগজ করতে থাকে, আসুক এবার। আবার বেলা পাঁচসো আর উনি পঞ্চাস হাজার। এমন করে কেউ কাউকে ঠকায়! সইবে নি কপালে!
ওদিকে টিভিতে ঘোষণা করছিল যে সুন্দরী মেয়েটি সে বলে চলেছে,আপনারা দেখলেন হাংগার ফিগার কিভাবে শিল্পীর হাতে চমৎকার রূপ পায়! যাইহোক আজ এখানেই শেষ করতে হচ্ছে বাংলার দুর্গা প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফাইনাল। আবার দেখা হবে। অন্য কোন দিন। অন্য কোন অনুষ্ঠানে।