ভিক্ষা: একটি অসামাজিক বায়োপিক
-ঋজু
টাইম কল থেকে জল পড়ে যাচ্ছে একনাগাড়ে ক্রমশ পুরু হয়ে। এভাবে রোজরোজ কলতলার মেঝেটায় পড়ে পড়ে বিরাট একটা ফাটল ধরেছে মাঝখানটায়; তবু পড়বে। কেউ নেই বন্ধ করার। নর্দমায় সাবান-ডিটারজেন্টের সাদা সাদা ফেনা; ভেতরের বাগদি পাড়ার রোগা রোগা ছেলেমেয়েগুলো স্নান সেরে গেছে; আর বোতল কলসি সব ভরে নিয়ে গেছে। ওদের বৌ’রা এদিকে আসে না স্নানে। দুটো মাথায় টুপি পরা মুরুব্বি গোছের লোক হনহন করে হেঁটে গলিটার ওপাড়ের কোথাও থেকে আচমকা বেরিয়ে রাস্তা পেরোলো। একটা ঠ্যাঙ খোঁড়া কালচে কুকুরটা রোজ রোজ এসব দেখে অভ্যস্ত; কলতলা থেকে ও পাশ দেয় ওদের। নর্দমার ধারে গিয়ে বসে-জল খাওয়ার বাহানায় লালা মেশায় সে জলে। ওটুকুই ওর গতি।
সাড়ে বারোটা বেজেছে; এদিকটার সামগ্রিক শান্তি ভেঙে মসজিদে দুপুরের আজান, “আল্লা-হো-আকবর”। কাক বসে ছিল দু’টো ঐ গম্বুজটার ওপর। ফড়ফড় শব্দে ডানা ঝাপ্টে উড়ে চলে গেল।
বড়ো বড়ো হরফে নামটা লেখা “শান্তি-নিবাস”।
অনেক দূর থেকে থেকে অজয়-তিতাসা নামের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আসত এদিকটায়, অনেকটা রাস্তায় রাস্তা পেরিয়ে; লোকাল বাসে।
দু’জনেই বিবাহিত বোধ হয়; তিতাসা তো অন্ততঃ…মেয়েটি সঙ্গে করে আনত চকোলেট, ডায়েরি এসব।
মেয়েটি ছেলেটির কাপড়-জামা, কাজের ব্যাগ, জামার কাফ-কলার গুছিয়ে,
নরম গোলাপি ঠোটপালিস চালিয়ে মুছে দিত সিগারেটের নিকোটিন জমা ঠোঁটজোড়ার প্রায় সবটুকু, সন্ধ্যে হবার আগেই মেয়েটির রুমালটি মেখে যেত নিজের ঠোঁটপালিশে।ফেরার পথে ওষুধের দোকান তার আগে। তারপর দৌড়ে যায় বাস-সেডে, টিকিট কাটে, লাইনে পা মেলায় তিতাসা, আর ফুটপাত ধরে লম্বা কমলাটে ছায়া ফেলে ফোনে মাতে অজয় ইত্যাদি।ঝনঝন শব্দ করে একটা পয়সাও নষ্ট করে না ওরা কক্ষনো এদিকটায়।
সন্ধ্যে নামলে চাটুজ্যেদের বৌ বিলিতী আদবকায়দায় আপিস থেকে ফেরার পথে এদিকটায় ঘুরে আসে,
মাঝে মাঝে বাঁকের ওদিকে মাইতিদের ব্লাউজের দোকানটা থেকে ঘুরে আসে।কি কেনে বোঝা যায় না।
একদিন;পিছু নিয়েছিলাম…শুধু যায় আর দোকানদার বুড়ো টাকে বলে “৩৬,কালো দেবেন”
একটা সিল-প্যাকেট ধরিয়ে দেয়; ও ব্যাগে নিয়ে নেয়।ব্যাগে চেন টানার সময়ও চোখে চোখে কিসব কথাবার্তা হয় তাকাতাকিতে।তেমনি বড়ো চারপাশ দেখে কানু কাকার দোকান থেকে সিগারেট নিয়ে নেয় ব্যাগে।আর;পাবলিক টয়লেটের ওদিকটার অলিগলি থেকে “স্বাধীন সমবায় সমিতি”র কর্মচারীরা তালিম দিয়ে বের হয় কাজে, “বাবু,আজ যাবেন নাকি?”
তার পেছনে থেকে টালি-চাল ঘর গুলোয় কালো আস্তরনপড়া হলদে হলদে ল্যাম্প জ্বলে;গোঙানি সোনা যায়।
কানু কাকা চা খাওয়ায় একবার। ওদিকে ম্যানেজার সাহেব, মাইতি বাবুদের আড্ডা জমে সন্ধ্যে বেলায়,অনেক গল্পের ভিড় জমে। তাই চা নিয়ে সরে পড়তে হয়।তিনফুটের চা; দেহে কিছুটা প্রাণ আসে তারপর। উবু হয়ে বসি, বিঁড়িতে টান বসাই আর কান্ড দেখি।সাড়ে আটটার দিকটায় ভিড় প্রায় নেই বললেই চলে-তাই সারাদিনের উপার্জন টুকু ব্যয় করে সেসময় একবার যাই পাবলিক টয়লেটে।
লাগোয়া দেওয়ালের ফাটাফুটির ওপাড়ে চাটুজ্যেদের বৌ টাকে দেখতে…টয়লেটের মালিকও বুঝে গেছে বের হবার সময় আলতো হেসে পিট চাপড়ে দেয়।হারামজাদা বিশ্বাসই করে না, ওটা ওদেরই বৌ।
তখন আমার পার্ট টাইম বয়ের কাজ শান্তি-নিবাসে ;সাব-মেনেজারবাবু বলেছিলেন অতিরিক্ত মাইনে দেবেন পয়লা আষাঢ়, চাটুজ্যের ছেলে-বৌ বিবাহবার্ষিকীতে খেতে এসেছিল রাতে। আমার চায়না মোবাইলটায় আবছা একটা ভিডিও-ও করেছিলাম; উল্টে বলে দিল “দিনে দুপুরে আফিম টানাটা বন্ধ কর। খুব লাল পড়ে না তোর?”
ক্ষমা চাওয়ায় তারপর ওদের কাছে। সে দিন টা কি ভোলার? চাকরিটা চলে যায়।ফোনটাও কেড়ে নেয়।
“এজন্যে তোকে রাখা? শালা এত ঢ্যামনা একটা দেহ বাগিয়ে রেখেছো আর ঘটে এতটুকু ঘিলু নেই? ভেন্টিলেশনটা নীচু করে কি জন্য বানানো নেমকহারামের বাচ্চা? লেডিস টয়লেটে সরাসরি ঢোকার জন্য?!!…যা, এবার যেখান থেকে এসেছিলি সেখানেই ফিরে যা; পচে মর আর দূর থেকে হাওয়ায় কখন কুর্তি উড়বে সে অপেক্ষা কর নাড়িয়ে নাড়িয়ে!”
বলতে চেয়েছিলাম কিছু; থামিয়ে আবার বললেন, “পুলিশে দেয়নি তোর কপাল জোর!” জানতাম সাহসটা দিন দিন বাড়ছে। ছিল না আদতে; কিন্তু পেটের জ্বালা পড়লে যখন একটুখানির জন্যে অনেকটা আঁচড়ানো কামড়ানো দরকার পড়ে;সাহসটা এমনিই এসে যায় বোধ হয়।ভয় ছিল; এভাবে বাড়তে থাকলে একদিন সামলাতে পারবো তো নিজেকে?
ফেরার পথে আফিম বড়ি কিনে ফিরি কানু কাকার থেকে।
বাড়ি ফিরে লম্ফো জ্বালাই,চিকচিকে কাগজে কালো কালো বড়ি;আর তামাকের চোঙা।
সারাটা পৃথিবী এমনই ধোঁয়া ধোঁয়া।
তখন আমিই চাটুজ্যেদের বৌ- আমি ই ওপাশের ওষুধের দোকান-পাবলিক টয়লেট- সাদাকালো ছবি-চায়না ফোনের ফুটেজ-৩৬- কালিমন্দির-ঘন্টা ধূপ-ভাগ্যলক্ষী লটারি-গদির নীচে টাকা-শান্তিনিবাস-সমবায় সমিতি-আরো টাকা-আরো চাটুজ্যের ছেলে-বৌ- আরো আরো টাকা- পুরো শান্তিনিবাস-
তি তা সা।
ক্লান্তি-ক্রান্তি-কাশি…
ভিজে প্যান্ট।।
ঘটনাটা এইতো সেদিনের। দিনটা শনিবার। কুড়োনো ধূপ-মোমবাতি তে সেদিনও ভাগ্যলক্ষী অপ্রসন্ন। এমনিতে খারাপ দিন। শান্তিনিবাসের ওপরে সেদিন জ্বলজ্বলে একটা শালিক। কুকুরটাও কেমন নেতিয়ে রয়েছে সকাল থেকে। টাইমকলে আজ দেরীতে জল। সবে সবে বৃষ্টি হয়ে গেল তবু ফ্যাকাশে মেঘটা কাটে নি। কাদের মিছিল টিছিল হয়ে গেল। কত দাপাদাপি নতুন দিনের! কত ব্যারিকেড, মিডিয়া…. হঠাৎ,লালবাতি চেপে পুলিশ গাড়ি; অমনি ধরপাকড়। রাস্তা ফাঁকা মূহূর্তে।
সমবায় সমিতির গলিগুলোর ভেতর থেকে আজো সাড়ে বাড়োটা বাজলো; “আল্লা-হো-আকবর…” ভেসে এলো।
আজ তিতাসা অজয় সামনের পার্কটায়। চাপা গলায় তিতাসা ওর বুকে মাথা রেখে কিসব বকছে; আর আকাশের দিকে তাকিয়ে অজয় ধোঁয়া ওড়াচ্ছে নিয়মিত।
সবশেষে বাজখাঁই গলায় একটা বিচ্ছিরি খাঁকারি শোনা গেল,”আরে এ তো আকচার ঘটে; এ আর এমন কি!” ফেলে দাও ওটা, ব্যাস, কেল্লা ফতে! আজি চলো ক্লিনিকে। আজ তো দুপুর দুপুর, সন্ধ্যের ভেতর হয়ে যাবে সবকিছু।”
অবাক হয়ে উঠে দাঁড়ালো তিতাসা।
-“আর কতোদিন অজয়? এভাবে অনেক তো হল… এবার প্লিজ…বিয়েটা…”
-“দেখেছো তো? এই তোমাদের মেয়েদের সমস্যা …আর কমলিকা,ঈশান? ওদের? ওরা কোথায় যাবে?”
….
অজয় উঠে চলে গেল একটু পর। তিতাসা তখনো আকাশের দিকে চেয়ে। উদাসীন।
আজ মনে হয় সবকটা শখ মিটবে।
আজ মনে হয়;অতোটা আঁচড়ে কামড়ে খেতে হবে না সবকিছুতে। আজ দেবতা প্রসন্ন।
জানি না কেন, ওরা হাজার চেষ্টা করেও আমার মতো সর্বহারা হতে পারে না। তার জন্য আবার এতো আফশোস! যাকগে, আমার কি?
জয় মা, জয় মা সিদ্ধেশ্বরী।
একবার বড়ো যত্নে মাদুলিগুলো ছুঁয়ে দেখে নিলাম।
আজ পিছু নেবো। নিতেই হবে। আজ না হলে কোনোদিন নয়। আজই…
(শেষ দৃশ্য)
কানু কাকার দোকানের এক কোনে তিতাসার লেদার ব্যাগটা পড়ে। ছিল অনেকটা দূরে; কাকা সরিয়ে রেখেছে ।সাড়ে ন’টা বাজে। আজ এ চত্ত্বরের সবকটা দোকানপাট বন্ধ। বৃষ্টি পড়ছে ছড়ছড় করে। রাস্তার পাশে জমা জল হূসহুস করে উড়িয়ে লাল-বাতি দেওয়া পুলিশগাড়ি চাটুজ্যেদের বাড়ি থেকে থানামুখে দৌড়োলো। চাটুজ্যের ছেলের মুখটাও দুপুরের তিতাসার মতোই পাংশু; ফ্যাকাশে মারা। ওরা অজয় তিতাসা দু’জনকেই পুলিশে দিয়েছে দু’টো ভিন্ন ভিন্ন কেসে।
তাড়না খেয়ে একরকম ছিটকে পড়ি গলি থেকে পাজামার দড়ি হাতে। বৃষ্টি পড়ছে,তাই অগত্যা ফিরে আসতে হয় কানু কাকার দোকানে। আলোচনা শোনা যায়,কানু কাকার চায়ের ঠেকে;
-“এটা আবার কোত্থেকে এসে জুটলো?”
-“আর কোত্থেকে? তিতাসার ব্যাগ ঝেপে ক’টা টাকা পেয়েছিল;ব্যাস অমনি বাবু পাজামার দড়ি গুটিয়ে হাজির কোঠায়। এসব ভিখিরিগুলোর শালা নিয়ত ঠিক নেই। এত জোয়ান একখানা শরীর হাঁকিয়ে রেখেছে,দু’বেলা মুট খাটলে তো অবস্থা ফেরে; তা না। কে কবে কখন দেবে…আর যতটুকুই বা পেল,যাচ্ছেতাই!
কাজবাজ না করে করে শরীরে মরচে পড়ে গেছে;ব্যাটার ছেলে কাজ পেলেও করবে না।
তেমনি লাগাতে পারে নি যেমন; খেয়েছে তাড়ন! সারাদিন লটারি, লোকের জ্বেলে যাওয়া ধূপ আবার জ্বালিয়ে পুন্যি করার খেলা, ভিক্ষাপাত্র হাতে বসে বসে মা’বোনের বয়সী মেয়েদের ভাঁজ দেখা আর রাত হলে আফিম টানা। এই তো কাজ সারাদিনের। ভিখিরির দল সব…”
শুনে আত্মসম্মানে লাইল; ভাবলাম একবার বলে উঠি,”কাজ কি তোর বাপ দেবে?’
-“আরে মশাই রাখুন তো,ও একা ভিক্ষা করে,আর আমরা কেউ করি না? আপনি আমি এমনকি ঐ পুলিশ ও এসব করে;ওরা বড়োলোক বলে লম্ফো জ্বালিয়ে ব্যানার টানিয়ে ডেপুটেশন দিয়ে ভিক্ষা চায়;তাই এত প্রচার,হেডলাইনে আসে,খারাপ হয় না আর আমরা লম্ফো নিভিয়ে করি,তাই আমরা অশিক্ষিত,ছোটোলোক,অথচ কি অদ্ভুত ব্যাপার দেখুন,এই আমরাই এসবে পার পেয়ে যাই আগে। এই যেমন ধরুন এই কানু’দা। এ অঞ্চলে কে জানে না যে ওলোক গাঁজা, আফিম সাপ্লাই দেয়;আমার আপনার মতন পুলিশ ও এসব জানে। ঘুষ খায়;না হলে কেস দেবে। এই সিস্টেমে সবচেয়ে বড়ো কোরাপশানটা এখানেই, যে,ওরা ৭৫০ স্কোয়ারফুটের ঘরের দলিলে লেখা থাকবে ১০০০ফুট। ২৫% “সুপার বিল্ড আপ” দেখিয়ে ১০০০ ফুটের দাম টাই নেবে ওরা;অথচ ৭৫০-এ ঐ ২৫% আপনি যোগ দিয়ে দেখবেন ওটা আদতে ৯৩৮ স্কোয়ারফুট হচ্ছে;১০০০ ফুটের অনেক কম। ওখানেই ওদের মুনাফা। আর যদ্দিনে আপনি এই অঙ্কটা বুঝবেন, আপনার ছেলের নাতনি তদ্দিনে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের গাড়িতে চেপে আপনার নাত-বৌ কে টাটা দিচ্ছে। এভাবেই সমাজে, মানুষে ওরা ওদের আইন ইনজেক্ট করে ভাইরাসের মতন।
আরে দাদা আমরা এই চায়ের দোকানে বসে এসব গল্প করছি,আর যারা ওপরতলায় গদিতে বসে,তারা কি এসব জানে না ভাবছেন? হাবলা ভাবছেন?
অথচ দেখুন কোনোরকম ভিক্ষাবৃত্তি অপরাধ বলে কোনোরকম আইনকানুন নেই। দেশে এরম কোটি কোটি জোয়ান ছেলে বসে আছে,আর তারপর যা হয়,’অলস মস্তিষ্ক শয়তানের বাসা’। কখনো এসব কেউ করবেও না। আরে ইন্ডাস্ট্রি একটা গড়লে তো অনেক সহকারী ইন্ডাস্ট্রি ও মদত পায়; এদের কাজবাজ জোটে; দুটো করে খায় এরা।না! সেখানে তো মুনাফা কম। আপনি আমি হলেও নিশ্চয়ই মুনাফাটাই আগে দেখতাম?”
-“সে সব ঠিকাছে, বুঝলাম। তাবলে “বৌদি মালপো খামু” বললেই মালপো জোটে না কপালে। দেখুন ঐ অজয়কে মালপো দিয়েছে;তাবলে আমি আপনি আর পাঁচ জন ও সে মালপোর ভাগ পাবো;সে আশা সমাজ রাখলেও-ওরা কিন্তু ঐ ভিখিরিটিকে একটা দিন ও ভিক্ষে দেয় নি। ওটাই বোধ হয় প্রাইভেট আর পাবলিকের তফাৎ টা। তবে দাদা,এখন ওসব সবই আইনত অপরাধ নয়;কেউ বলতে পারে না,আজ এই বিষয়টা জানতে পারার পর বাড়ি গিয়ে রাতে কেউ আত্মক্রিয়া করবে না এবিষয়টা নিয়ে ফ্যান্টাসাইজ করে! তারপরও দেখুন সেদিন কিন্তু এই ভিখারিটাকে কেউ জেলে দেয় নি। সুযোগ করে দিয়েছে উপরন্তু। আজ,ওকে ভিক্ষে দিয়েছে তিতাসা;দেখেছি। অষ্টমীর দিন,লুচিভোগের সময় চাটুজ্যেবাবুও কি জানতো না,যে,এ টেবিলে থাকা অর্ধেক লোক আদতে লুচির চেয়ে তাঁর বৌমার পেটি আর দাপনাটা বেশি খাচ্ছে? আমাদের ভিক্ষা টা বোধ হয় ঐ প্রাইভেট এ ঢোকার জন্যই,না কি বলুন?
-“বা ঐ প্রাইভেসির মুনাফা টুকু নিজের পকেটে ঢোকানোর…থোড়াই কেউ কিছু বলতে যাচ্ছে!”
(অট্টহাসি)