মশলা মুড়ি
অঞ্জনা গোড়িয়া
এই মুড়ি খাবে? মশলা মুড়ি!
আমার মনের কথাটাই যেন বলে দিল। কি করে বুঝলো মশলা মুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে পাশাপাশি বসে, লঞ্চে মুড়ি খেতে খেতে গল্প করতে করতে আর- না না আর কিছু নয়। ইস্ কি ভাবছি কত লোক বসে আছে না, এই লঞ্চে! আমি কি পারি একমুঠো মুড়ি ওকে খায়িয়ে দিতে? আমি কি পারি একটা হাত আমার হাতে রাখতে, শক্ত করে ধরে নদীর বুকে খুঁনসুটি করতে? কত দিন পরে দেখা, মিলিত হয়েছি একসাথে। শুধু দেখছি, কথা যেন জড়িয়ে যাচ্ছে। ভেবে এসে ছিলাম কত কি বলব, করব, ইস সব কেমন গুলিয়ে গেল ওকে দেখে। সেই হাসি, প্রাণ খোলা কথা, সমাজ সেবার অঙ্গীকার অসহায় নারীর সহায়, বন্ধুকে আমি পেয়েছি নিজের করে। এ যে পরম সৌভাগ্য। তাতেই আমি ধন্য, আর কি চাই বলো? প্রচন্ড গরম হচ্ছিল লঞ্চে, ও ঘেমে যাচ্ছে, ভাবলাম মুছিয়ে দিই আঁচল দিয়ে, একটু পরশ তো পাবো, সেই বাঁধা! অন্যদের তাকান কৌতূহল দৃষ্টি যে আমার ওপর। ওই বলল- তুমি ঘেমে যাচ্ছো একটু নদীর দিকে ঘুরে দাঁড়াও।
পাশাপাশি দু’জনে কত কাছে, তবু ছুঁতে পারি নি ওকে। ওর ঘ্রাণ আমার চোখে মুখে। আমি যেন এক অনাবিল সুখে আচ্ছন্ন। কতবার ভাবছি এই বুঝি হাতটা ধরে বলবে, এই আমায় ভালোবাসো? চার ইঞ্চির শর্ত যাক ঘুচে। এসো হাত ধরে বসি। পাগল একটা আমি, শুধু ভেবেই গেলাম, জানি ও কথা রাখবে, নিজে কোন দিন জোর করবে না। আমাকেই ধরা দিতে হবে । যখন ভাবনা শেষ ,তখন নদী লঞ্চ কিনারায়। এবার নামতে হবে। তাও ভাবলাম ও বুঝি হাতটা ধরেই নামিয়ে দেবে? কি বোকা বোকা লাগছে। লজ্জায় মরে যাই, এসব কি ভাবছি। মুড়ির ঠোঙাটা ভাসিয়ে দিলাম মাঝনদীতে দু’জনে । ওখানেই মিলিত হোক দুই ঠোঙার ভালোবাসা।
-চলো গাড়ি দাঁড়িয়ে!
বিদায়