গর্ভভাড়া
– শচীদুলাল পাল
গুজরাতের আমেদাবাদ শহর সংলগ্ন এক গ্রাম। গ্রামের ছেলে মেয়েরা দিনমজুর। কেউ বা বাড়ি বাড়ি কাজ করে। মূলত রাজ মিস্ত্রি কল মিস্ত্রি ইত্যাদি মিস্ত্রির কাজ। মেয়েরা রান্না বান্না বাসনমাজার কাজও করে। কেউবা গৃহবধু।
হতদরিদ্র দক্ষা নামে একটি মেয়ে বয়স প্রায় পঁচিশ। গ্রামের এক ধারে মাকে নিয়ে থাকত। লেখাপড়া স্কুল পাশ।
এক রিক্সাচালকের সাথে বিয়ে হয়েছিল।তাকেও বাড়ি বাড়ি কাজ করতে হতো।একদিন দূর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যায় । সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় সে তার পা ফিরে পেলেও খুব একটা সুস্থ হয়নি। ঠিকমতো জয়েন্ট হয়নি। খানিকটা পঙ্গু বললেই হয়।
গর্ভবতীও হয়েছিল সে। দিন দিন অনাহার আর নির্যাতন। মাতাল স্বামীর অকথ্য মারে গর্ভপাত হলো তার।
হত দরিদ্র স্বামী ও তার পরিবার নেয়নি তার ভার। ঘর থেকে বের করে দিয়েছিল।
আইনি ঝামেলায় না গিয়ে ঠিক করল মায়ের সাথে থাকবে। বাবা কারখানার শ্রমিক ছিলেন। বছর দশেক হলো গত হয়েছেন। একদিন তাদের অবস্থা সচ্ছল ছিল। এখন মা অন্যের বাড়ি কাজ করে। সে ঘরে বসে কিছু কাজ করে রোজগার করে দিন চালাবে মনে ভাবলো। কিন্তু কি করবে?
হঠাৎ মা হলো গুরুতর অসুস্থ। স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লো।
আয় উপায় গেল বন্ধ হয়ে। অনাহারে অর্ধাহারে কাটাতে লাগলো। কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে দিন কাটাতে লাগলো।
একদিন বাজারে তার এক পুরানো বান্ধবীর মায়ের সাথে দেখা হলো। বান্ধবীর মা শিলা দূর থেকে ডাকলো –“দক্ষা”।
দক্ষা অনেক দিন পর পুরানো শিলা আন্টির সাক্ষাৎ পেয়ে আনন্দিত হলো।
কথায় কথায় দক্ষা তার দারিদ্র্য আর জীবনের কষ্ট বর্ণনা করল।
শিলা তাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে ভরপেট খাওয়ালো এবং মায়ের জন্য খাবারের প্যাকেট ধরিয়ে দিয়ে বলল। “আজ চলি একদিন তোদের বাড়ি আসব।”
একদিন শিলা সত্যিই এলো। শহর লাগোয়া গ্রামটির আড়াই কাঠা জমি। দক্ষার বাবার পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরটা বেশ সুন্দর। একদিক ভাড়া দেওয়া যায়।
শিলা বলল “দেশে বিদেশে বহু দম্পতি নিঃসন্তান। তাদের অনেকের প্রচুর অর্থসম্পদ আছে। কিন্তু নাই কোনো সন্তান। একটা সন্তানের জন্য কত হা পিত্যেশ করে মরছে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছে। কিন্তু ফল পায়নি। এমনি এক নিঃসন্তান দম্পত্তির খোঁজ আমি জানি। তারা তোকে অনেক টাকা দেবে। তুই যা চাইবি তাই পাবি। মাকে চিকিৎসা করাতে পারবি। সারাজীবন সচ্ছল ভাবে জীবন কাটাতে পারবি।
দক্ষা বললো “আমি কী করতে পারি? আমি কিভাবে তাদের সাহায্য করব?”
– তোকে সারোগেসি মাদার হতে হবে।
– ব্যাপার টা কিছুই বুঝতে পারছি না। একটু বুঝিয়ে বল।
– দম্পতি কানাডায় থাকে। অনাবাসী ভারতীয়। তাদের দু’জনের মধ্যে খুব ভাব। একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারেনা।স্ত্রীর ফেলোপিন টিউবে কী একটা সমস্যা আছে। মা হতে পারবে না।
কিন্তু স্বামীর কোনো সমস্যা নেই। টেস্ট রিপোর্ট ভালো। স্পার্মগুলি দীর্ঘক্ষণ জীবিত থাকে। তারা সারোগেসি মাদার চাইছে। অর্থাৎ গর্ভভাড়া।
তুই কী গর্ভভাড়া দিতে রাজি? প্রচুর টাকা পাবি। কল্পনা করতে পারবিনা।
– এমনি একটা প্রস্তাব শুনে দক্ষা ঘাবড়ে গেল। হকচকিয়ে গেল।
আকাশ পাতাল ভাবতে লাগলো।
“এই নে একটা ফোন। এই ফোনটা আজ থেকে তোর। আমি মাঝে মাঝে তোকে ফোন করব। তুই ডাকলে আসব। ভেবে চিনতে বলবি।”
দক্ষা দিন কয়েক অনেক ভাবলো। মায়ের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডাক্তার বলেছে এডভানস স্টেজ।
একদিন শিলাকে ফোন করল শুধু বলল “আমি রাজি। আপনি আসুন আন্টি।” শিলা এসে তার হাতে ৫০০০০ টাকা দিয়ে বলল “এগুলি রাখ। সব তোর। মন দিয়ে পরিকল্পনা শোন। রাজি হওয়া না হওয়াটা তোর ইচ্ছে। আমি তোর আন্টি। আমি তোর ও তার সাথে নিসন্তান দম্পত্তির উপকার করতে চাই।”
দক্ষা শিলার হাতে এককাপ চা এনে দিয়ে বলল। “এবার বলুন এটা কীভাবে সম্ভব।”
শিলা বলল, “এটা একটু অন্য ধরনের পরিকল্পনা। কানাডা থেকে যে দম্পতি আসবে তারা ভারতীয়। গুজরাটি।আমেদাবাদে চাকরির ট্রান্সফার নিয়ে আসবে। নাম তার শান্তিলাল ঠক্কর। আই. টি. সেক্টারে উচ্চপদস্থ। স্ত্রী জয়া গৃহবধূ। তারা উভয়ে তোদের ঘরে ভাড়া নিয়ে থাকবে। জয়া রান্নাবান্না করবে। তুই তোর মা সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করবি।
রাত্রে তোকে শান্তিলালের বিছানায় শুতে হবে। দেহমিলন করতে হবে। শান্তিলালের ঔরসজাত সন্তানের জন্ম দিতে হবে। সন্তান মাস দু’য়েক বড় হলেই তোকে তোর সন্তানকে জয়ার হাতে তুলে দিতে হবে। তার বিনিময়ে প্রচুর অর্থমূল্য পাবি।
সমস্ত ব্যাপারটা এগ্রিমেন্ট হবে কিন্তু গোপন থাকবে। কেউ জানবে না। রাজি থাকলে আমাকে জানাবি। আজ চলি।”
শিলার দেওয়া টাকায় মাকে কেমো দেওয়া হলো। কিন্তু মাকে বাঁচিয়ে রাখা গেলো না।
একদিন মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো।
শ্রাদ্ধ শান্তি চুকে গেলে অনেক কিছু ভাবলো। তারপর শিলাকে ফোন করে সব জানালো।বললো “আমি রাজি আন্টি।”
দক্ষা শিলার দেওয়া টাকা যেটুকু অবশিষ্ট ছিল তা দিয়ে অতিথিদের ঘরটা সংস্কার করলো। যথাসম্ভব টিপ টাপ করলো।পরিত্যক্ত ঘরগুলি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করলো। মাঝখানে একদিন শিলা এসে আরো কিছু টাকা দিয়ে গেলো।
দক্ষা অর্থোপিডিক্স দেখিয়ে সম্পুর্ণ সুস্থ হলো। একদিন ঘরের সামনে এক ট্যাক্সি এসে থামলো। ট্যাক্সি থেকে নামলো একজোড়া দম্পতি। সাথে শিলা আন্টি। শিলা আন্টি পরিচয় করিয়ে দিল। ইনি হচ্ছেন মিঃ শান্তিলাল ঠক্কর ও মিসেস জয়া ঠক্কর। আর এই মেয়েটি দক্ষা প্যাটেল। দক্ষা ঘর ভাড়া দেবে। আপনারা দেখে শুনে নেন। দক্ষা তাদের সাদরে অভ্যর্থনা জানালো।
ভাড়ার ঘরটা সম্পুর্ণ আলাদা সেখানে জল, রান্নাঘর, বাথরুম দু’টো বেডরুম, বারান্দা। বেশ আলো বাতাস পূর্ণ। দক্ষা মায়ের সাথে যে ঘরে থাকত সেটি অপেক্ষাকৃত ছোট। দক্ষা জয়াকে বললো “ম্যাডাম পছন্দ হয়েছে?” জয়া শান্তিলাল দু’জনেই বললো “হ্যাঁ,আমাদের ঘর ও তোমাকে বেশ পছন্দ।”
জয়া বললো “শিলা আন্টির প্রস্তাবে তুমি রাজি তো? তোমাকে সারোগেট মাদার হতে হবে!”
শান্তিলাল বললো, “শুধু ঘরভাড়া নয় তোমাকে গর্ভভাড়া দিতে হবে। এজন্য তুমি প্রচুর টাকা পাবে। যা দিয়ে তুমি সারাজীবন বসে বসে খেতে পারবে, বিলাসময় জীবন কাটাতে পারবে।”
দক্ষা লাজুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো “আমি রাজি।”
শিলা তার ব্যাগ থেকে দু’কপি এগ্রিমেন্ট কাগজ বের করে তিনজনের সই করিয়ে নিল। সে নিজেও সই করল। এক কপি দক্ষার হাতে আর এক কপি শান্তিলালের হাতে দিয়ে দিল। আর তিনজনকেই বিষয়টা গোপন রাখার কথা বলে বিদায় নিল।অপেক্ষমান এক ট্যাক্সি ধরে ফিরে গেলো।
দক্ষা ঠক্কর দম্পতিকে বললো, “আপনারা স্নান সেরে নিন। আমি আপনাদের জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে আসি। দুপুরের খাবার একসাথে খেয়ে নিয়ে ঠক্কর দম্পতি বিশ্রাম নিতে গেল।”
দক্ষা নিজের ঘরে এসে এগ্রিমেন্ট খুলে দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ। সেখানে পরিস্কার লেখা এই গর্ভভাড়ার জন্য সে ৭০ লাখ টাকা পাবে। বাড়ি ভাড়া মাসে মাসে আর দৈনন্দিন খরচ আলাদা।
আনন্দে দক্ষার দু’চোখ বেয়ে জল এসে গেলো।
ভদ্রলোক রোজ অফিসে যায় ফেরে সন্ধ্যায়। একদিন এক লরি আসবাবপত্র নিয়ে এলো। ঘর সাজানো হলো। খাওয়া দাওয়া একসাথেই করত। পুষ্টিকর খাবার খেয়ে দক্ষা বেশ হৃষ্টপুষ্ট হলো। শরীরে বল ভরসা ফিরে পেল। একদিন পাড়ার এক মেয়ে বললো “তুই ত বেশ সুন্দর হয়েছিস।বেশ গ্লামারার্স লাগছে।”
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল। দক্ষা প্রতিরাতে অপেক্ষায় থাকে। এই বুঝি ভদ্রলোক আমার ঘরে এসেছেন।
ভদ্রলোকও প্রতি রাতে একাকী অপেক্ষায় থাকে। ভাবে কি জানি কেন আসেনা। হয়তো শরীর ঠিক নেই।
একদিন জয়া ডিনার টেবিলে বসে দক্ষাকে জিজ্ঞেস করলো “তুমি নিশ্চয়ই রাতে মিঃ শান্তিলালের ঘরে নিয়মিত আসছো?”
পঁচিশ বছরের পূর্ণ যৌবনা দক্ষা বিয়াল্লিশ বছর বয়সী মিঃ ঠক্করের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় রাঙা হলো। দু’জনে দু’জনের দিকে তাকিয়ে রইলো।
পিরিয়ড শেষে পঞ্চম দিনে স্নানান্তে দক্ষার মনটা উসখুস করছিল। আর জয়ার কথাটা বারবার মনে পড়ছিল। সেদিন ছিল ঘনঘোর শ্রাবণের রাত। বাইরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। ধীর পায়ে সে তার বেডরুম থেকে বের হলো। তার ও মিঃ ঠক্করের শোবার ঘরের মাঝখানে উঠান। ইতস্তত করতে গিয়ে যাব কি যাব না ভাবতে ভাবতে শ্রাবণের বারিধারায় ভিজেই গেল। সিক্ত বসনে সে ধীর পায়ে শান্তিলালের ঘরে প্রবেশ করলো।
শান্তিলাল জেগেই ছিল। স্বল্পাভ নীল আলোয় দক্ষাকে দেখে বললো “একি তুমি ত সম্পুর্ণ ভিজে গেছো।”
উঠে দাঁড়িয়ে তোয়ালে এনে দিল। দক্ষা তার ভিজে যাওয়া শাড়ি কাপড় সব একে একে খুলে ফেলল।
ফর্সা গায়ের রঙ। ঘরের নাইট ল্যাম্পের নীল আলো দক্ষার শরীরে ঠিকরে পড়ছে।ক্ষীন কটিদেশ। সুডৌল স্তন যুগল। গুরু নিতম্ব। সিক্ত দক্ষা দু’হাত বাড়িয়ে দিল।শান্তিলাল তোয়ালে নিয়ে দক্ষার সিক্ত অঙ্গ মুছিয়ে দিতে লাগলো। উচ্ছল উদ্যাম কামাতুরা পূর্ণ যৌবনা দক্ষাকে পাঁজাকোলা করে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিল। কড়্ কড়্ কড়াৎ শব্দে বাজ পড়লো। তার সাথে বিদ্যুতের ঝলকানি। দক্ষা শান্তিলালকে জড়িয়ে ধরে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে সমর্পণ করলো।
দু’জনেই যৌন উত্তেজিত হলো। কামাগ্নি প্রজ্বলিত হলো। তারা রাতভর যৌনক্রিয়ায় রত হোলো। দক্ষা অনুভব করলো এক অভূতপূর্ব অনুভূতি। বাইরে তখন শ্রাবণের ধারা। তার দেহ মন ক্ষরা শেষে সিক্ত হলো। তার পূর্ণযৌবনা শরীরের অঙ্গে অঙ্গে শ্রাবণের বারিষনের মতো এক অনাবিল শিহরণ বয়ে গেলো।
এভাবে প্রায় প্রতিদিন তারা মিলিত হতে লাগল। উভয়ের প্রতি এক ভাললাগা থেকে ভালবাসায় পরিণত হলো।
আস্তে আস্তে অভ্যাসে পরিণত হলো।একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারতো না।
একদিন জয়া বললো- “আমরা টেস্ট টিউব বেবি, স্পার্ম ব্যাঙ্ক প্রভৃতির দ্বারা সন্তান লাভের পক্ষে নই। তাই এইরকম একটি মেয়ের সন্ধান করছিলাম। তুমি রাজি হয়েছো। আমরা খুব খুশি। দেশ বিদেশের ক্লিনিকগুলিতে যে সব পদ্ধতি রয়েছে সেগুলি আমাদের পছন্দ নয়। কেমন যেন কৃত্রিম লাগে।”
এভাবে মাস তিনেক কেটে গেলো। দক্ষা একদিন ডিনার টেবল থেকে খেতে খেতে উঠে গেলো।
বেসিনে বমি করল। হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলো। ঠক্কর দম্পতি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে একটা ট্যাক্সি ডেকে শহরে এক ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে জানতে পারলো দক্ষা কনসিভ করেছে। তারা মহা আনন্দে সযত্নে দক্ষাকে বাড়ি নিয়ে এলো। শিলাকে ডেকে সুসংবাদ দিল। শিলা পরবর্তী পরিকল্পনা জানালো। পুরো ব্যাপারটা গোপন রাখতে হবে।
কেউ যেন জানতে না পারে দক্ষা অন্তঃসত্ত্বা। আমি একটি গাইনোক্লোজিস্ট এর ঠিকানা লিখে দিচ্ছি সেখানে আপনারা নিয়মিত চেকিং এর জন্য তিনজনই যাবেন। আর মিসেস জয়া আপনি বিভিন্ন সাইজের কতগুলো প্রেগন্যান্সি ফেক প্যাড ব্যবহার করবেন। প্রতিমাসে ক্রমানুসারে বড় প্যাড ব্যবহার করবেন। আর প্যাডগুলি আমি আপনাদের কিনে দিয়ে যাব। প্রতিবেশী সবাই জানবে মিসেস জয়া প্রেগন্যান্ট। তার বাচ্চা হবে।
ঠিক ঠিক নির্দেশ দিয়ে শিলা চলে গেলো। প্রতিদিন দক্ষাকে ফোন করে শরীর ও মনের খোঁজ নিতে লাগলো। শান্তিলাল জয়া দু’জনেই দক্ষার দেখভাল অনেক বাড়িয়ে দিল। তারা দু’জনে তাকে রাত জেগে সেবা করতে লাগলো। এভাবে প্রায় সাত আট মাস কেটে গেলো। ইউ. এস. জি. রিপোর্ট এ তারিখ দেওয়া হলো। তার বেশ কয়েকদিন আগে শহরের এক দামি নার্সিং হোমে দক্ষাকে ভর্তি করা হলো। ঠক্কর দম্পতি স্থানীয় এক আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে লাগলো। নিদিষ্ট দিনে দক্ষার সিজার হলো। দক্ষা পুত্র সন্তানের জন্ম দিল। দক্ষা মা হলো।ঠক্কর দম্পতি, শিলা, দক্ষা সবার মন আনন্দে খুশিতে ভরে গেলো।
দক্ষা বুকের দুধ দিয়ে রাত জেগে সম্পূর্ণ মাতৃস্নেহে তার পুত্র সন্তানকে লালন পালন করতে লাগলো। এভাবে সন্তান স্নেহে সে তার সব কিছু ভুলে সন্তান প্রেমে মসগুল হয়ে গেল।একদিন রাতে সে স্বপ্ন দেখলো কে বা কারা তার ছেলেকে ছিনিয়ে নিতে আসছে। সেই থেকে দক্ষা তার ছেলেকে একদম কাছ ছাড়া করতো না। অজানা আশঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠতো। সে ভুলেই গিয়েছিল যে তার ছেলের গর্ভধারিণী মা হলে কী হবে! তাকে একদিন ঠক্কর দম্পতির হাতে তুলে দিতে হবে।
সন্তানের জন্মের প্রায় মাস খানেক বাদ।একদিন শিলা এলো তার ঘরে সাথে জয়া আর শান্তিলাল।
শিলা বললো “এবার তুই তোর ছেলেকে ঠক্কর দম্পতির হাতে তুলে দে। ওরা ওদের সন্তানকে নিয়ে কানাডা চলে যাবে।”
দক্ষার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে গেলো। বুকফাটা আর্তনাদ করে সে তার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরলো। বলল আপনাদের এগ্রিমেন্ট সব ছিঁড়ে ফেলুন আমি কোনো টাকা পয়সা চাইনা। আমার জমি নিন। ঘর বাড়ি নিন। আমার দেহ নিন শুধু আমার ছেলেকে আমাকে দিন।”
শান্তিলাল বললো, “তা হয়না। আমরা শুধু সন্তানের জন্যই সুদুর কানাডা থেকে এসেছি।”
দক্ষা বললো “শুধু কি তাই। প্রতি রাতে যে বলতেন আমি তোমার দেহ শুধু নয় মনটাকেও ভালবাসি। এ ভালোবাসা চিরকাল থাকবে।”
মিঃ ঠক্কর একেবারে চুপ হয়ে গেল। সে সেই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গেলো। জয়া শিলা প্রথমে অনেক বুঝালো। পরে বলল ঝামেলা করলে সবাই আমরা বিপদে পড়ে যাব। বর্তমান আইনানুসারে দণ্ডনীয় অপরাধ। এমনকি চার জনেরই জেল হয়ে যাবে। ছেলেটা বড়ো হয়ে এইসব ঘটনা যখন জানবে তখন তোমাকে ঘৃণা করবে। সে নিজেকে অবহেলিত মনে করবে। সুতরাং তুমি তোমার ছেলেকে আমাদের হাতে দিয়ে দাও।
এর মধ্যে মিঃ ঠক্কর এসে গেলো। একটা এগ্রিমেন্ট পেপার ও একগুচ্ছ চাবি দক্ষার হাতে দিয়ে বললো “তোমাকে এবার থেকে তোমার গ্রামের বাড়িতে থাকতে হবেনা। আমেদাবাদ এ আমার একটা ফ্ল্যাট আছে আভিজাত্য আবাসনে। আজ থেকে তুমি আমার ফ্ল্যাট এ থাকবে। আমি তোমার নামে লিখে দিলাম। আর যা যা টাকা তোমাকে দিয়েছি সব তোমার। কথামতো ৭০ লাখ টাকা তোমার একাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছি এই ধরো পাশবুক, এ.টি.এম. কার্ড চেকবুক আর কারের চাবি। ঘরের আসবাবপত্রও সব তোমার।”
দক্ষা তখন তার শিশু পুত্রকে স্তনের দুধ দিচ্ছে। এবার জয়া গিয়ে জোর করে বাচ্চাটাকে কোল থেকে ছিনিয়ে নিল। বাচ্চাটি চীৎকার করে কাঁদতে লাগলো।
দক্ষা ছেলের দিকে তাকিয়ে জ্ঞান হারালো। জ্ঞান যখন ফিরল তখন সে আর স্বাভাবিক নয়। বুকে অসহ্য ব্যাথা। টস টস করে স্তন দিয়ে দুধ বেরিয়ে যাচ্ছে। শিলা তাকে নতুন ফ্লাটে পৌঁছে দিল। দক্ষা জানতে পারলো তার ছেলে ঠক্কর দম্পতির সাথে গতকালই ফ্লাইট এ কানাডার উদ্যেশে রওনা হয়েছে।
শিলা দক্ষার স্তনদুগ্ধ বের করে দিচ্ছে। স্তনের দুধের ধারা ঘরের মেঝে গড়িয়ে বয়ে চলেছে দেশ থেকে দেশান্তরে।
একদম বাস্তব সমস্যার প্রেক্ষিতে দারুণ লেখা
ধন্যবাদ।
আপনার মন্তব্য ও মুগ্ধতায় প্রাণিত হলাম
Mayer moner byatha onnera bujhte pare na