আন্দোলন
-শক্তি পুরকাইত
নাম- রেহেনা বিবি, বয়স- সাতাশ বছর। দ্বিতীয় লাশটার মুখ থেকে কাপড় সরায় সুতনু রায়। হরিদেব পুর থানায় মাস দু’য়েক আগে এসেছে। লাশটা দেখে চমকে ওঠে। বাচ্চাটা যে ভাবে পুড়েছে, তা ভাবা যায় না। চোখের সামনে দাউ -দাউ করে জ্বলছে গোটা বস্তি। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে কেউ বাদ যায়নি। এ-ও ছুটেছে। কেউ সন্তান হারার শোকে কাতর। কেউ স্বজন হারানোর কান্নায় ভেঙে পড়ছে। চারিদিকে শুধু মৃত্যুর ছায়া। এক-এক করে সাজানো কুড়িটা লাশ। মেহের আলিও খুঁজছে তার বউ-বাচ্চাকে। একদিন নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্নে সরকারের বিরুদ্ধে পা মিলিয়েছিল। কিন্তু তার বিনিময়ে এই পরিণাম। সে বুঝতে পারে নি, কে বা কারা এ কাজ করতে পারে! এ বছর ঈদে দেওয়া শাড়িটা দেখে চিনতে পারে বউটাকে। পাশে শোয়ানো ছোট মেয়েটা। পুড়ে যাওয়া মা ও মেয়ের নিথর দেহ। সারা শরীর আন্দোলন হতে থাকে তার। সে চিৎকার করে ওঠে, রে – হে – না! পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে যায়, মেহের আলিকে।