ইচ্ছা পূরণ
-সুমিত মোদক
আজ আমার তিনটে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে ;
তিন তিনটে ইচ্ছা ;
আর বাকি আছে একটা ;
সে ইচ্ছাটা পূরণ করবে আমার সবচেয়ে কাছের জন ,
যে সবচেয়ে আমাকে ভালবাসে
আমার বাবা ;
বাবাকে বলেছি , রাতে জোনাকি ধরে দিতে ;
যে জোনাকি গুলো আমাদের ছোট ঘরটায়
মিটমিট করে আলো জ্বালবে ;
অন্ধকারে জোনাকির আলোতে আলোময় হয়ে উঠবে আমার জীবন , আমাদের জীবন ;
কথা গুলো শুনে মা বলেছিল —
তোর বাবা তোর কোন ইচ্ছা পূরণ করতে পারবে না ;
কোন দিন কারোর ইচ্ছা পূরণ করতে পারে নি ;
নিজেরও….
সারাটা জীবন কেবল স্বপ্ন বুনে গেলো ;
স্বপ্ন দেখিয়ে গেলো সকলকে ;
আমাকেও…..
তাই , এখন আর ইচ্ছা পূরণের কথা বলি না ;
নিজেই নিজের ইচ্ছা পূরণ করে গেছি ;
তোকেও তাই করতে হবে….
আমার বাবা , আমার বাবার কবিতার মতো ,
বাংলা কবিতার মতো , সহজ-সরল-নরম…
কেউ না বুঝলেও আমার বাবাকে ,
তার ভিতরের মানুষটিকে ;
সুন্দরবনের মণি নদীর মতো প্রবাহিত ;
ভৈরবী রাগের মতো বিস্তার…
আমার বাবা ;
বাবা বলেছে —
যেদিন রাতে ঝমঝম করে বৃষ্টি নামবে ,
সেদিন ঠিক জানালা দিয়ে
একের পর এক জোনাকি ঢুকে পড়বে ঘরে ;
ঘরের ভিতরটাকে করে তুলবে মায়াবী , স্বর্গভূমি ;
আর তুমি তখন সেই স্বর্গরাজ্যের বাসিন্দা ;
জোনাকি ধরতে হয় না , ধরা দেয় ;
ধরা দেবেও একদিন না একদিন ;
সেদিনই তোর ইচ্ছা পূরণ হবে , হবেই . .
যেদিন ঝমঝম করে বৃষ্টি ঝরবে বিকাল থেকে ,
সেদিন সন্ধ্যায় ঘরের জানালা গুলো খুলে রেখো ;
খুলে রেখো মনের সকল জানালেও ….
বাবা , আজ এ শ্রাবণে , এ বর্ষা সন্ধ্যায়
খুলে রেখেছি সকল জানালা ;
দেখো , তোমার কথা মতো একের পর এক জোনাকি ঢুকে পড়ছে ঘরে ;
জোনাকির আলোয় আলোয় ভরে উঠছে আমাদের ঘর , আমার ঘর ;
আমিও হয়ে উঠছি আলোময়
আমার ইচ্ছা পূরণের ইচ্ছা-ডানায় ;
বাবা , তুমিই দিয়েছিলে আমার আমার ইচ্ছা পূরণের মন্ত্র , বাঁচার মন্ত্র , বাঁচানোর মন্ত্র ।।
সুন্দর