ছায়া
– শক্তি পুরকাইত
‘অকালে মায়ের মাথাটা খেয়ে, আমার হয়েছে যত জ্বালা! বিশ্বরূপকে বার বার বলেছিলুম, এই মা মরা মেয়েটার মুখ চেয়ে একটা বিয়ে কর। আমার তো বয়েস হচ্ছে, ওকে কে দেখবে, কে মানুষ করবে!’ জানলার ফাঁক দিয়ে এতক্ষণ ঠাকুমার কথাগুলো বার বার মনে করছিল, লীনা। ঠাকুমা ওকে বলতো তোকে বিয়ে দিয়েই তবে আমি দু’চোখের পাতা এক করবো। নইলে মরে গিয়ে শান্তি পাবো না, একবিন্দু। সকল সময় তোর সাথে সাথে ছায়া হয়ে ঘুরে বেড়াবো! ঠাকুমা, মারা গেছে মাস খেনেক আগে। তবু লীনার মনটা কেঁদে ওঠে, ঠাকুমার জন্যে। কিছুই তার ভাল লাগে না। উঠোনে পা রাখতে সে দেখতে পায়, ঠাকুমা এঁটো বাসনগুলো মাজছে। নিম গাছের শীতল হাওয়ার সাথে মিশে যাচ্ছে, সাদা থানটা। ঠাকুমা ডাকছে- লীনা, এই লীনা! সে ছুটে গিয়ে, ঠাকুমাকে ছুঁতে চেষ্টা করে। পারে না। মূহুর্তে সে বুঝতে পারল, তিনি এ পৃথিবীতে নেই। লীনা ‘ঠাকুমা’ বলে কেঁদে উঠল আর এক বার ।