কবিতা

কবিতা- ছেলেবেলার সেই দিনগুলি

ছেলেবেলার সেই দিনগুলি
– শচীদুলাল পাল

 

আজ আর নেই শৈশবকাল,
হারিয়ে গেছে সেই বাল্যকাল।
মায়ের কোল নিরাপদ আঁচল,
আদর সোহাগের দিনকাল।
শয়নে জাগরনে মায়ের পাশে থাকা,
কান্নায় মাকে কাছে ডাকা।
দুষ্টুমি বকুনি বাবা মায়ের শাসন,
গুরুজনদের উপদেশ আদেশ পালন।
ভাইবোনে খুনসুটি ঝগড়াঝাঁটি,
কাঁদতে কাঁদতে হাসি মিটিমিটি।
ডাংগুলি জলকেলি ফুটবল খেলা,
কানামাছি লুকোচুরিরর সেই ছেলেবেলা।
ডুব সাঁতারে পুকুর পারাপার,
সাইকেল শেখা পড়া ওঠা বারবার।
জোরে জোরে পড়ে পড়া মুখস্থ,
শ্রুতি লিখন পাতার পর পাতা কণ্ঠস্থ।
শ্লেট পেনসিল দোয়াত কালি কলম,
রঙিন পেনসিলে রামধনুর সাত রং।
অধ্যয়নে মানুষ হওয়ার সাধনা,
ছেলেবেলার মিষ্টি মধুর ভাবনা।

আজ আর নেই সেই শৈশব।
আদর সোহাগ আজ বড় অভাব।
সময়ে স্কুলে যাবার তাড়া অতি,
হোম ওয়ার্ক ক্লাস ওয়ার্ক না হলে শাস্তি।
ছুটির পর ঘরে এসে কেয়ার টেকারের শাসন।
খেলা ধুলা দুষ্টুমি সব বারণ।
টিভি আর কার্টুন মনোরঞ্জন।
গৃহ শিক্ষকদের আগমন ও প্রস্থান।
হোম ওয়ার্ক এ মায়ের অনুশাসন।
গভীর রাতে ডিনার শেষে শয়ন।
বাবা মা দুজনেই কর্মব্যস্ত সময় নেই অল্পক্ষণ।
ফেসবুকে হোয়াটসঅ্যাপে কাটে তাদের বেশিক্ষণ।
পরীক্ষায় বেশি নাম্বার না পেলে মারধর চড়।
হতে হবে যে আই এস ইঞ্জিনিয়ার ডক্টর।
ধরবে তুমি হাল কারন একটাই সন্তান।
তাই শুধু পড়া ফল মানসিক বিকলন।
গরীবের শৈশবে স্কুলছুট বিদ্যার বিসর্জন।
অনাহারে অর্ধাহারে দিন গুজরান।
পিতা পঙ্গু মায়ের স্বল্প আয়ে দিনযাপন।
শৈশবে দিনমজুর শিশু শ্রমিকে কর্মসংস্থান।
শিশুকন্যা পেটের জালায় কাজে যোগদান।
পুরুষের কুনজর আদরের নামে ধর্ষণ।
প্রতিবাদে বহিস্কার অপুষ্টিতে মরণ।

Loading

One Comment

Leave A Comment

You cannot copy content of this page