মানুষের ধর্ম
– পারমিতা ভট্টাচার্য
আজ আর অন্যায়ের সাথে কোনও আপোস নয়
এবার তোলো প্রতিবাদের বজ্রকঠিন আওয়াজ,
জাতের নামে বজ্জাতি করা ধর্মান্ধরা জানে না
আসলে ধর্ম নামের কী মানে।
যে ধর্ম তরোয়ালের সাথে ত্রিশূলের
ভয়ংকর যুদ্ধ বাঁধায়,
যে ধর্ম মানুষের চোখের জল মোছানোর বদলে
লাশ ফেলে প্রতিনিয়ত ধর্মের জিগির তুলে,
যে ধর্মধ্বজার বাহকেরা শয়তানের আস্তানা করে
পবিত্র মন্দির- মসজিদ- গির্জা,
সে ধর্ম আমি চাই না, সে ধর্ম আমি মানি না।
ধর্ম তো মনের শক্তি,
যা মনের মলিনতা দূর করে ফুৎকারে।
তাই নয় কি?
কোরান- পুরাণ- বাইবেলের মধ্যে
কোনও মতবিরোধ আছে কি?
ওরা সবাই মুখে বলে সাম্যের কথা,
আর সুযোগ বুঝে গায়ে মেখে নেয়
লাল, নীল, সবুজ, গেরুয়া রঙ।
গিরগিটির মত রঙ পাল্টায় ওরা
স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে।
কেউ কি রাখে খোঁজ বুভুক্ষর পেটের খিদের?
কিম্বা বস্তির শতছিন্ন পোশাকের মেয়েটার?
কিম্বা যে দুধের শিশু শুকনো স্তনে মুখ লাগিয়ে
খিদের জ্বালায় চিৎকার করে, কেউ রাখে না খোঁজ।
ঝুলি ভরে নিয়ে আসে গাল ভরা কথা,
উপুড় করে ভাষণ দিয়ে উধাও হয়ে যায়।
ধর্ম আর রঙ এক সময় একে অন্যেতে হয় সম্পৃক্ত,
আমি সেই নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি,
যেখানে ধর্ম মানুষে মানুষে লাগবে না জাতের লড়াই,
যেখানে ধর্ম আনবে মানুষের মনে সুখস্মৃতি,
যেখানে ধর্ম ত্রিশূল আর তরোয়ালকে করবে স্থিতধী,
সেই ধর্মই হোক মানুষের বিশ্বাস,
সেই ধর্মই হোক মানুষের ধর্ম।