Site icon আলাপী মন

কবিতা- পাতি ছেলে

পাতি ছেলে
– অতীশ দীপঙ্কর

 

খুব ছোটবেলায় শুনেছিলাম,
আমার বাবা নাকি উদ্বাস্তু!
সাতচল্লিশের একটি পেন্সিলের দাগে আমার দাদু
এক লহমায় হারিয়েছিলেন বাস্তু।
বাবার নাকি তখন মাত্র তিন!
মায়া মমতার বন্ধন ছিঁড়ে চোখ মুছতে মুছতে হ’ল দীন।
আমি লহু-মজ্জায় সব-হারানো রক্ত বইছি–
আমি অবশ্যই পাতি ছেলে বৈকি!
Turdus পাখির মতো —-
সকালে বিস্তৃত ধানক্ষেতে রোদ বাড়লে,
বাঁশের খুঁটির উপর থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসি,
উড়ন্ত পোকাই আহার করি, পুড়ি আর রোজ বাঁচি।
ফুর্তিবাজ আমুদে তামাটে কপাল সহ পিঠে
উজ্জ্বল ইস্পাতের মতো,
ভেতরটা শুভ্রতার পাহাড় চুড়া
তোমার আয়ত্ত আর ধরা ছোঁয়ার বাইরে দেখো।
আমি দল বাঁধি খাবার খুঁজি,
ঝাঁক বেঁধে উড়ন্ত পোকার খোঁজে থাকি,
তুমি কি সেই উড়ন্ত উই পোকা নাকি?
আমি নেহাতই একজন পাতি।
নিন্দিত উপেক্ষিত বিচলিত পাতি কেউ..
আমি অশান্ত অশ্লীল কাব্যিক হয়েও
অগ্নিদগ্ধ ভয়ানক ঢেউ।
তুমি পাতি মানুষের কথা ভেবেছো?
ঠাঁই দিয়েছো তোমার কলমে?
রোজ সারাদিন কাজের ঘোরে একলা আমি
ভ্রান্ত যখন পাতি ছেলে।
এই মুখ পোড়া কপাল পোড়াদের একটুকুও খবর নাও?
পাতি মানুষদের গিফ্ট না দাও—
দামোদরের বনজ চরে অন্তত নিজের মতো থাকতে দাও।

Exit mobile version