কবিতা- আবর্তন

আবর্তন
– অতীশ দীপঙ্কর

 

মেঘ ছুটে যায় আকাশে কালো কালো ঘোর
আজও বইছে অদ্বয় কঠিন গুমোট বায়ু ডোর।
ঢলঢল জল পরে পদ্ম শালুকের ডাটা
শৈবাল যেন মেলেছে পাখা,
ভ্রমর মেলা বসেছে জল তল জুড়ে পদ্মের গায়।
আজ সারাদিন শুধু মেঘ মঞ্জুরী বায়।

কাঁচা রোদটুকু বসেছে বনের সিক্ত পাতায়..
তবুও বাতাস পাগল হয়েছে নায়।
ঝিরিঝিরি কাঁপে শিরিষ অশ্বত্থ,
আজ তবুও মন বড়োই অশক্ত..
সারা বন জুড়ে মাত্র নিশ্চুপ পাখির কুজন
ভোর থেকে কথাকয় কেবল কোকিল সুজন।

ঐ বৃষ্টি ভরা দিঘির না আছে তল,
কানায় কানায় ছলকে ওঠে জল।
চারিদিকে ঘাটে কথা চালাচালি রটে
তোমার বলাবলি রসাস্বাদনে এবেলায় আর নাহি চলে।
একাকার হলো তীর আর উচ্ছ্বাস তলায় তলায়,
পুরনো অপূর্ণতা উঠছে বারবার নতুন ভেলায়।

যত কানাঘুসো হবে তত ভেসে যাবে
থাকল না আজও কপর্দক মিল কথার সাথে।
ঘাটের সিঁড়িটিতে ডুবিয়ে গলা
পুরনো অপূর্ণতায় তৃপ্ত বাসনার ফুল ফোটালে একান্তে।

ভরা জলে ভেসেছো মহাসুখে
ফাঁকা কলসী ধরে আছো বুকে।
তিমিরনিবিড় ঘনঘটা ঘুম চোখে
তপন আতপে উত্তপ্ত হয়ে ঢলছে বেলা স্বপ্নে।

শালুক গাঁথা তোমার কঙ্কণে কুঞ্জছায়া গুঞ্জরে
ওড়না ছাড়া নাচের ভঙ্গিতে,
শিউলির বিশ্বাসে যে বুক উঠতো আন্দলী
আজও ফেনিল আকাশে ঝিলিক তোমা অঙ্গনে।

তবুও ভালোবাসা প্রাণপণ এই রূপে শতবার
সময় যাবৎ রয় অনিবার।
শত বেশ ধরে নাও নি সে উপহার….
এখনো মুগ্ধ হৃদয় গাঁথে গান মনোভার।
ভেসে ওঠে সময়ে অসময়ে বেহিসেবী অতীতে
যত পুরানো কথা,
অসীম অতীত তিমির ছিঁড়ে আনে তোমারই মুর্তি
ভোরের আকাশে দূরে দেখা একমাত্র ধ্রুবতারা।

Loading

Leave A Comment