নদী ও কিনার
-অমল দাস
কিনার অবলীলায় উদার হৃৎপিণ্ড দ্বিখণ্ডিত করে
নদীর চলার পথ প্রশস্ত করেছিল সানন্দে।
ডান ও বাম অলিন্দে সবুজায়নের ঘেরাটোপে
আকাশের রঙ বাঁধা শাড়িতে নদীও চিরযুবতী সেজেছিল-
আরাধ্য কিনারের জন্য!
আনন্দ উচ্ছ্বাসের প্রেম পরাগে সহাবস্থানে বেঁধেছিল ঘর।
লোলুপতার দৃষ্টিতে আমাদের এ জগত তীব্র রূঢ়!
একটু একটু বালুকাবৃত ক্ষোভ দীর্ঘদিন অন্তরে পুঞ্জীভূত করে
নদী ব্যাকুল প্রলয় নিয়ে আছড়ে পড়ে কিনারের’পরে।
অবুঝ ভালোবাসার জলাহুতিতে কিনার তখন চূর্ণবিচূর্ণ!
ক্ষয়ে যায় তবু মাস্তুলসম দাঁড়িয়ে থাকে –
নদীকে ভালোবেসে আগলে রাখে দৃঢ় অঙ্গীকারে।
নদী বোঝনি কিনারের আত্মবলিদান অথবা বুঝেছিল!
হয়তো নিরুপায় সে, হয়তো বা শঠতায় আছড়ে পড়ে নানা অছিলায়!
নিরুত্তাপ নিরুত্তরে বিদীর্ণ কিনার প্রতিবাদহীন
যুবতী নদীকে সাবলীল ক্রমে সাজিয়ে চলে নির্দ্বিধায়
আজও ভালোবাসার গভীরতা অধরা নদীর কাছে,
শুধু চাহিদা আর মেকি অশ্রুতে তা সমাহিত
কিনারের অঙ্গহানিতে নদীর মনস্কাম পরিপূর্ণ
দুই অলিন্দ দূরে আরও বহু যোজন দূরে..পথ প্রশস্ত করে
ভাঙা গোধূলিবেলায় ভাঙা আঙিনায় কিনার মিলিয়ে যায় সমতলে!
নদীর ঐশ্বর্য যৌবন ফিকে পড়ে অস্তমিত সূর্যের আড়ালে
আদর্শ গভীরতা গতি হারা হয়ে বার্ধক্যের পতনে
আজও কিনারের প্রেম বোধস্পর্শ করেনি নদীর।