অণু গল্প- প্রথম দেখা

প্রথম দেখা
– সাহানা মন্ডল

 

একেবারে ছাপোষা মধ্যবিত্ত জীবন, কেউ কাউকে চিনত না।
হঠাৎ এক বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় অচেনা অতিথির মতো এসে দাঁড়িয়েছিলো দরজায়।
সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে কানে ভেসে আসছিল দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ।
কে? কে ডাকছেন এতো বৃষ্টিতে!
প্রত্যুত্তরে ভেসে আসা উত্তর, আমি….. দয়া করে দরজা খুলুন।
হাতের প্রদীপ নামিয়ে রেখে দৌড়ে দরজায় গেল অনুসূয়া। দেখল বৃষ্টি ভেজা বলিষ্ঠ শরীর, সুঠাম, সুন্দর।
সৌজন্যতায় শুকনো তোয়ালে এগিয়ে দিলো হাতে।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল- বাড়িতে আর কে আছেন?
আমি আপনার দাদার বন্ধু শুভম। মুচকি হেসে চলে গেল অনুসূয়া পাশের ঘরে।
কিছুটা সময় পরে অনুসূয়া দেখে, শুভম আড় চোখে কি খুঁজছেন!!
জিজ্ঞাসা করল- “কি লাগবে আপনার? “
উত্তর এলো একটু চা দেবেন ভীষণ শীত করছে।
অনুসূয়া তার দাদার আলমারি থেকে এক সেট জামা প্যান্ট বার করে শুভমকে দেয়।
সম্পূর্ণ ভিজে গেছেন চেঞ্জ করুন জ্বর এসে যাবে। আমি চা নিয়ে আসছি….
অনুসূয়া আড় চোখে দেখতে লাগল শুভমকে।
হঠাৎ শুভমের চোখে পড়ে যায় সেটা।
ভীষণ লজ্জা পায় অনুসূয়া।
চা নিয়ে আর শুভমের সামনে যেতে পারে না,
পর্দার আড়াল থেকে হাত বাড়িয়ে বলে— “এই যে চা”
শুভম ডাকে অনুসূয়াকে। এসো ভিতরে এসো। ওভাবে দিচ্ছ কেন? এখনও অচেনা মনে হচ্ছে বুঝি?
অনুসূয়া বুকের ভেতর হালকা হয়ে গেল, উঠে চলে এলো পাশের ঘরে।
শুভম চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে শুনতে পেল কলিং বেলের আওয়াজ।
অনুসূয়া.. কোথায় গেলে? কে ডাকছে? এসো দরজা খোল।
সাড়া না পেয়ে শুভম নিজেই দরজা খুলে দেখল তার বন্ধু অনুসূয়ার দাদা এসে গেছে।
কি রে কখন এলি? আর বলিস না ……তোর বাড়ি আসতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গেলাম।
তোর আলমারি থেকে অনুসূয়া এই সেটটা দিল, আমি চেঞ্জ করে পড়েছি।
অনুসূয়া পাশের ঘর থেকে সব কথা শুনছে আর আড় চোখে শুভমকে দেখছে।
কথাবার্তা শেষ। এবার শুভমের যাওয়ার পালা।
অনুসূয়া পাশের ঘর থেকে ছুটে এলো দরজায়- “আবার এসো কিন্তু ….” শুভম মুচকি হেসে চলে গেল।
অনুসূয়ার দাদা শুভমের বিয়ের কার্ডটা অনুসূয়ার হাতে দিয়ে বলল——– শুভম তোকেও যেতে বলে গেল। ওর বিয়েতে যাবি!

Loading

Leave A Comment