স্বপ্ন সন্ধানী
– উজ্জ্বল দাস
– কিরে কখন বেরোবি বললি না যে…
– হ্যাঁ এবার বেরবো, তুই কোথায়..
– আরে ছাড় তো তখন থেকে বলছিস এই বেরোচ্ছি, এই বেরোচ্ছি। আর কত বৌ এর কোলে বসে আদর খাবি বলতো…
– আরে হ্যাঁ আসছি, তুই টিকিট পেয়েছিস..
– সে তো কখন কাটা হয়ে গেছে, লাইন বেশী ছিল না..
– আচ্ছা দাঁড়া তেল মাখছি, স্নান করেই বেরবো এই আর একটু..
– তাড়াতাড়ি কর আমি ঠিক ফুড স্টলটার পাশেই থাকবো।
সাড়ে বারোটা বাজে এখনো মৌ অভিরূপের দেখা পেলো না, কখন যে আসবে মালটা কে জানে? শালা এক সপ্তাহ আগেই প্ল্যানটা করা ছিল, যে অফিস না গিয়ে সিনেমা দেখতে যাবে দু’জনে, তার ওপর এতোগুলো বছর পরে দেখা, তার উত্তেজনাই আলাদা। এদিকে ১ টার শো শুরু না হয়ে যায়! অবশ্য শ্যামবাজার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই অভিরূপের বাড়ি।
প্রায় বছর দশেক আলাপ দু’জনের। প্রেমটাও বেশ গাঢ়, কিন্তু হঠাৎ একটা ছোট্ট ঝড়ে এলোমেলো হয়ে গেছিলো অভিরূপ আর মৌ এর সম্পর্কের এতোগুলো বছর। সাত বছর আগে ডিসেম্বরের ঠিক এই দিনটাতেই ওদের বিয়ে করার কথা স্থির হয়েছিলো।
কিন্তু বনেদী বাড়ির বড়লোক বাবার একমাত্র ছেলের বিয়ে কিছুতেই কোনো নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ের সাথে হতে দেবেন না অভির বাবা, সেটা আগেই বলে দিয়েছিলেন। এদিকে নাছোড় মৌ আর অভির প্রেমের বয়স প্রায় বছর তিনেক। অথচ বাবার অ-মতে বিয়ে করার সাহসও অভির নেই সেটা মৌও বিলক্ষণ জানতো।
শীতের এই মিষ্টি রোদ্দুরের দুপুর বেলা গুড়াপের এক কালী মন্দিরেই ওরা বিয়েটা সেরে ফেলবে ঠিক করেছিল। সেই মতো মৌ ও তার পিসিকে রাজি করে সেখানে দিন দশেক কাটাবে বলে গুড়াপে চলে আসে, সঙ্গে শর্মিলা, মৌটুসী আর দু’জনের কমন ফ্রেন্ড সুজাতা ও শুভ। ভেবে ছিলো বিয়েটা একবার হয়ে গেলে বাড়িতে হয়তো মেনে নেবে সবাই।
দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ, চারদিকে গুটি কয়েক মাটির বাড়ি, তার ওপর গোবর লেপে ঘুঁটে দিয়ে যাচ্ছে একদল বৌ, হাঁটু পর্যন্ত আটপৌরে শাড়ি। পুকুরে জেলেরা মাছ ধরছে। গোটা দশ দিন সবার একটু আনন্দেই কাটবে তার ওপর প্রিয়বন্ধুর বাড়িতে না জানিয়ে পালিয়ে বিয়ে। উফফ যেন রোমাঞ্চটাই আলাদা। নতুন নতুন শাড়ি, জামাকাপড়, পুরুত, টোপর,ঘি, মধু, হলুদ, কুলো, পান, সিঁদুর সবই কেনাকাটা হয়ে গেছে। শুধু বরের আসার অপেক্ষা। সবাই একটা টান টান উত্তেজনায় এই শীতেও যেন ঘেমে যাচ্ছে, আদৌ অভি আসছে তো! এই সমস্ত সাতপাঁচ ভেবেই চলেছে মৌ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে, সত্যি তো আজ কি অভি আসবে!
না সবার আশঙ্কাই সেদিন সত্যি হয়েছিল। অভি সেদিন আসেনি এমনকি অনেক চেষ্টা করেও অভিকে আর ফোনেও পাওয়া যায়নি, ব্যাস ঐ টুকুই। তারপর আর অভির সঙ্গে যোগাযোগ করার মনপ্রবৃত্তি হয়নি কারুর।
সদ্য তিরিশের এক সন্তানের জননী এই সুন্দরী কিছুদিন আগে ফেবু মেসেঞ্জারে হঠাৎ একটা টেক্সট পেয়ে চমকে উঠেছিল, চোখের ভুল নয় তো, তাহলে।
এতদিন খুঁজেছি! কোথায়! ফেবুতে পাইনি তো অভিকে। তাহলে আজ হঠাৎ!!
–কেমন আছো মৌ? উত্তর দিও, পারলে
তিন চার দিন পর মৌ উত্তর দিয়েছিলো,
– Doing well, wht abt u অভি, হঠাৎ!!
– নাহ্, যাতে আমায় কেউ খুঁজে না পাও তাই প্রোফাইল creat করিনি এতো দিন, হঠাৎ খুব মনে পড়ছিল তোমার কথা, কদিন আগেই FB তে Account করলাম। ভাবলাম যদি তোমায় খুঁজে পাই, তোমায় একটা টেক্সট করব। তুমি কি কথা বলবে না আমার সাথে!!
– কেন বলবো না, বলতেই পারি, তবে হ্যাঁ…
– কি..
– যদি আমাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের হয়, সহজ হয় তবেই।
– আমার কোনো অসুবিধা নেই মৌ, কেমন আছো তুমি…
– আমি, হা হা হা, কেন! খারাপ থাকার কথা ছিলো বুঝি। তবে হ্যাঁ অভি যদি বন্ধু হই তুই তুই করে কথা বলতে পারো তবেই আমায় টেক্সট করো, নাহলে….
– পারবো মৌ পারবো, I need a friend, trust me, m not well….
এভাবেই শুরু হয়েছিল ওদের সম্পর্কের দ্বিতীয় ইনিংস।
এতোশত ভেবে ভেবে প্রায় ঘড়ির কাটা ১ টা ছুঁই ছুঁই, কাঁধে আলতো ছোঁয়া..
– চল পাগলি এরপর পর তো সিনেমা শেষ হয়ে যাবে, চল চল..
– অভি….তুই এসেছিস, আমি তো ভাবলাম আজ ও তুই…আচ্ছা চল, সব কথা পরে হবে। কি হ্যান্ডু হয়েছিস তুই….আরো অনেক কিছু বলার আছে আগে ঢোক।
আজ অভি খুঁজে পেয়েছে মৌকে এটা সত্যি, কিন্তু গত দু’মাস ধরে প্রায় দু’জন দু’জনকে নতুন করে আবার চেনা শুরু করেছিল। মৌপিয়া সেনগুপ্তের সেপারেশন হতে চলেছে, ও ওর বরের সাথে ছ’ মাস হলো থাকে না। অতি আধুনিক কায়দা দুরস্থ মিঃ নির্মাল্যের সাথে কিছুতেই বনিবনা হচ্ছিলো না মৌ এর। রোজ রোজ এক অশান্তি, বন্ধু বান্ধব নিয়ে ড্রিংক করে ঘরে ফেরা আর ছেলেটাও তো বড় হচ্ছে, আর মানিয়ে নিতে না পেরেই এই সিদ্ধান্ত। নির্মাল্যকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে ছিলো, কথা দিয়েছিলো নিজেকে শুধরে নেবার। না সব মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, পারেনি নিজেকে পাল্টাতে, সেই একই নির্ভেজাল মাতলামি, অসহ্য।
আর স্বপ্ন সন্ধানী অভি!…
(দুই)
মৌয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা ভেঙে যাওয়ার পর অভি প্রায় বিছানা নিয়েছিলো মানসিক অবসাদ কাটিয়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। না খেয়ে না ঘুমিয়ে শরীরটাই খারাপ হয়ে গেছিলো। বছর খানেক পর অভির দাম্ভিক বড়লোক বাবা খুব বড় ঘরে অভির বিয়ে দিয়েছিলেন বটে, ভীষণ জাঁকজমক করে। কিন্তু অভি খুশি কিনা একটুও জানার ইচ্ছে প্রকাশ করেননি কোনোদিন।
টায়ে টুয়ে কোনো রকমে মাধ্যমিক পাশ করা উঠতি বড়লোক বাপের একমাত্র মেয়ে অদিতির সঙ্গে অভির পরিণয় হয়েছিল। কিন্তু একাধিক অবৈধ সাম্পর্কের বীজ বোনা, ছিলো অদিতির রোজকার প্যাশন যাকে বলে হাল ফ্যাশন এর বেশ্যা। পয়সার নেশায় সারাদিন মত্ত থাকতো, শ্বশুর শাশুড়িকেও বিন্দু মাত্র পরোয়া করতো না অদিতি। এক সময় পারিবারিক অশান্তি চরমে পৌঁছেছিলো। অসহায় অভি, বৌয়ের দেমাক আর বেল্লালাপনায় অসহ্য হয়ে বার দুই আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেছিল কিন্তু সাহসে কুলায়নি। এই অমানুষিক বাড়ির পরিবেশ সহনশীলতার বাইরে চলে যাচ্ছিল দিনের পর দিন, বাবার বয়সটাই বারবার জানান দিছিলো যে। হঠাৎ একদিন ভোর বেলা খবরের কাগজ পড়তে পড়তে বনেদী বৌমার মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন অভির বাবা।
সংসারের বাঁধন শুধু আলগাই হলো না, দড়ির ফাঁসটাও একেবারে খুলে গেল। অদিতি চলে গেছে নিজের সাউথ কলকতার ফ্ল্যাটে, সে আজ প্রায় ১৭/১৮ মাস হলো। বৈবাহিক সম্পর্কেরও কোনো ছিঁটে ফোঁটা নেই।
সিনেমার ক্লাইম্যাক্স বোঝার আগেই সিনেমাটা শেষ করে বেরিয়ে এলো দু’জনে। অন্ধকারে দু’জনে অনেকক্ষন কাছাকাছি, কথা নেই মুখে। হাত দু’টো অজান্তেই ধরে ফেলেছিল একে অপরের, যেন কত দিনের এক না পাওয়ার অনুভূতি, ভেতরে জমে থাকা কত দিনের চাপা দম বন্ধ করা ফাঁস, শুধু কেটে বেরিয়ে আসা।
আজ মৌ যেন অসম্ভব রূপসী, সবুজ লেগিংস আর সুতোর কাজ করা চকলেট রঙের কুর্তিতেও শরীরের প্রত্যেকটা বিভাজিকা স্পষ্ট। আর বরাবের হ্যান্ডসাম অভি- ডার্ক নেভি-ব্লু জিন্স সঙ্গে ধপধপে সাদা টিশার্ট আর রোদ চশমায় চোখগুলো ঢাকা। যত কথা সব ফেবু মেসেঞ্জারেই, সামনা সামনি কথা বলার যেন সাহসই হচ্ছে না কারুর।
হঠাৎ নীরবতা ভাঙলো মৌ,
– কিরে চল কিছু খাই…
– হাঁ চল, কি খাবি?
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তোরাঁয় ঢুকে একটু হালকা হলো মুখোমুখি বসে।
এরপর..
এরপর থেকে দু’জনে দু’জনকে চোখে হারাতে থাকলো, কথা না হলে অভিমান যেন আছড়ে পড়তে থাকে সারাদিন, দোষারোপের পর দোষারোপ। এতো আরো কাছাকাছি আসারই ইঙ্গিত। দু’জনেই তো একা, প্রাণপণ খুঁজে চলা জীবন সঙ্গীর অপেক্ষায়। দেখাও হতে থাকলো প্রায় প্রত্যেক দিন, কখনো রেস্তোরাঁ, কখনো বাড়ি। শুধুই দিন গোনা, কে আগে ভাঙবে। না এবারেও মৌ….
– কিরে অভি, একটা বিয়ে কর না….
– করবো তোর মত মেয়ে পেলেই (বলেই হাসতে থাকে)
— মৌ সিরিয়াস) করবি? যদি পাস!
– করবো যদি….পাই, তুই ও তো বিয়ে করতে পারিস….
-করবো যদি তোকে পাই..
– চল….
– কোথায়….
– গুরাপ….
— অভি…. প্লীজ…ইয়ার্কি মারিসনা, আর কষ্ট পেতে চাইনা…. প্লীজ..
–আই এম সিরিয়াস মৌ…
বলেই দু’জন দু’জনকে জড়িয়ে ধরে যেন ১০ বছরের নীরবতা ভেঙে চরম গভীরতায় চিনতে শুরু করলো নিজেদের। কেউ কারুর দিকে তাকাতে পারছে না, বাকরুদ্ধ, দম বন্ধ। সারা বাড়ি জুড়ে একরাশ নীরবতা।
নতুন প্রেমে পরার মজাই যে আলাদা, তার ওপর সে যদি হয় একটু জানা, কিছুটা চেনা। সত্যি জীবনে বারবার প্রেমে পরা যায়….বার বার। জীবনের প্রতিটি বাঁকে যদি নিজের মানুষটাকে নতুন নতুন ভাবে চেনা যায়– জানা যায়–মন্দ কি- সত্যি এতো আরো কাছে পাওয়ারই ইঙ্গিত বয়ে আনে। কোথাও কারুর ওপর অধিকার আরেকটু বেশী… যেন মন বলতে থেকে…
– আজ তো লিপস্টিকটা একটু গাঢ় লাগালেই পারতে
– তুমিও তো চুলটা আরেকটু ছোট করোনি, বললাম আজ ব্ল্যাক শার্টটা পরতে….
– যেন কাজলটা বেশি হালকা না হয়…
– চলো না একটু হেঁটে আসি….
বর্ষায় দু’টো হাত এক করে হাঁটা, ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টিতে সারা শরীর ভিজিয়ে, ভেজা চুলে আলতো বিলি কাটা। আর তা যদি হয় পালিয়ে — সেতো একটা গোটা প্রেম ভেজা দিন। দু’জনে দু:জনের হাত ধরে সারা জীবনের পথ চলতে চাওয়ার আশ্বাস।
ঠিক হয়ে গেছে দিনক্ষণ। যেন হাত ছানি দিচ্ছে সেই গুড়াপের মন্দির, সেই গ্রাম, মোরাম করা লাল মাটির রাস্তা। গরুর গাড়ির দাগ যেন চিহ্ন রেখে যাবে ওদের গান্তব্যে। যেখানে মৌ হয়েছিলো লগ্নভ্রষ্টা। এবার ওরা একদম একা। নিজেরাই যাবে, আবদ্ধ হবে প্রজাপতি ঋষির আশীর্বাদ নিতে। বেঁধে ফেলবে নিজেদের বিবাহ বন্ধনে।
দাম্ভিক বাবা আজ নেই, থাকলে হয়তো অভি আজও পারি দিতে পারতো না গুরাপের মায়ের মন্দিরে নিজের গাঁটছড়া বাঁধতে। ভোর বেলা হাওড়া পৌছে ট্রেনে উঠে বসেছে। সঙ্গে রয়েছে ধুতি আর গরোদের পাঞ্জাবি। না না সিঁদুর নিতে ভোলেনি অভি। কয়েক ঘন্টা ট্রেন সফর, ব্যাস!! তারপরেই এ জীবনের অতি আকাঙ্খিত জীবন সঙ্গিনীটি তার হয়ে যাবে। ভাবতে ভাবতে ট্রেন অনেক দূর পৌছে গেছে। এবার নামার পালা।
একটা ছোট সাঁকো পড়িয়ে গরুর গাড়ি করে অভি পৌঁছে গেলো তার হারিয়ে যাওয়া সাত সাতটা বছর পেছনে, মৌ তার পিসি আর পুরুত মশাইকে নিয়ে আসছে একটু আগেই ফোনে জানালো।
সেই পুরোনো স্মৃতিগুলো মনের ভেতর থেকে হাতড়ে বার করে ভেবে চলেছে অভি। কই, কোথায় গেলো রে বাবা, আর কতক্ষণ অপেক্ষা করাবে মৌ। আরেকটা ফোন করেই দেখা যাক।
ক্রিং…ক্রিং….ক্রিং….
রিং হয়ে চললো, উফ্ফ ফোনটা তো তোল…
আবার…. ক্রিং….ক্রিং…ক্রিং…
আবার…..ক্রিং…….ক্রিং…..ক্রিং….
আবার…ক্রিং….ক্রিং….
কি হলো কোনো অঘটন নয় তো। মৌ তো কালকেই চলে এসেছে, সারাক্ষণ কত ফিরিস্তি দিলো হোয়াটস আ্যপে। তাহলে আজ কি হলো। একটাও উত্তর নেই কেন। পিসি অন্তত ধরবে তো ফোনটা। আবার…
ক্রিং…..ক্রিং…..ক্রিং…….
ওপাস থেকে উত্তর এলো…গম্ভীর পুরুষ কন্ঠ!!
“বলুন অভিরূপ, নির্মাল্যা হেয়ার, মৌপিয়ার হাসবেন্ড বলছি। সরি অভিরূপ বাবু মৌ একটু ব্যস্ত আছে!”
অভির সারা শরীর নিথর পাথরের মতো দাঁড়িয়ে, যেন ধরিত্রী বিভাজিত হয়ে গিলতে আসছে। হে ভগবান, এও প্রাপ্য ছিলো। এতো ভয়ঙ্কর প্রহসন। এতো ভীষণ প্রতিশোধ স্পৃহা, এতো বড় অভিনেতা তুমি? তার মানে সবটাই মিথ্যে!! সেপারেশন!! তুমি কি করলে মৌ- আমি তো তোমায় ঠকাইনি, তবে কোন জীবনের পাপের এতো বড় সাজা। হে ভগবান!! হে ভগবান!!
ফোনটা হাত থেকে পরে গেলো। মান্দিরের লাল মেঝেতে সারা শরীর এলিয়ে দিলো স্বপ্ন সন্ধানী অভিরূপ!! ধপ করে অন্ধকার নেমে এলো মন্দির চৌহদ্দিতে । কিচির মিচির শব্দে পাখিরা বাসায় ফিরছে যেন। নিস্তব্ধ ঝিঝি পোকারা ডেকে চলেছে আপন খেয়ালে। চামচিকেরা চিক চিক করে সজরে লাথি মেরে কানের পাশ দিয়ে উড়ে যেতে যেতে যেন বলে গেলো,
“ভালো থেকো অভি, আমি তোমারই ছিলাম, আমি তোমারই ছিলাম। আমি আছি আমি আছি আমি আছি……ফিরে যাও অভি….ফিরে যাও….ফিরে যাও…. ফিরে যাও”
পাঠকরা বিচার করবেন অভিরূপকে আমি অতিরিক্ত বঞ্চিত করলাম কিনা….
-সমাপ্ত-
ধন্যবাদ আলাপি মন
মৌ একদিন তো ভালোবেসেছিলো অভি কে, পরবর্তী কালে অভি অনেক অন্যায় করেছে ঠিকই তবু মৌ এর এই ব্যবহার মানতে খুব কষ্ট হলো, একটা ভেঙে পড়া মানুষকে আবারো ভেঙে দেওয়া, তার গভীর ক্ষতকে আরো গভীর হতে দিতে লজ্জা করা উচিত ছিলো মৌয়ের | বন্ধু হয়ে, প্রেমিকার অভিনয় করে এমন কাজ কখনোই সমর্থন যোগ্য নয় |
পুরুষ হিসেবে এটা আমিও একমত
খুব সুন্দর উপস্থাপনা ।ভালো লাগলো ।তবে বেশ্যা শব্দটি এভাবে ব্যবহার ঠিক লাগলো না ।চরিত্রহীনা বললেই হয় তা না হলে যারা অভাবের তাড়নায় এই কাজ করে,যাদের উপস্থিতির জন্য আমরা সাধারন নারীরা কিছুটা হলেও সুরক্ষিত তাদের ছোটো করা হয়।
এটা আমার অভিমত ।