সিগন্যাল কথা বলে
– রীণা চ্যাটার্জী
কথা বলে সিগন্যাল, নিঃশব্দে- সোচ্চারে
লাল, সবুজের নিয়ন আলোর বিচ্ছুরণে
সময়ের গণিত হাতে রেখে জ্বলে-নেভে।
কোমল-তীক্ষ্ম দশমিকে– সিগন্যাল কথা বলে।
বদলে যাওয়া সিগন্যাল দেখার প্রয়োজন বোধ
করে নি, মুঠোফোনের ব্যস্ততায় মগ্ন পথচারী।
অপর দিকের গাড়িটি চেয়েছিল নির্বিঘ্নে সময়ের
সিগন্যাল পেরিয়ে যেতে, মুহুর্তের অসতর্কতার
সংঘর্ষে ঘটে যাওয়া অঘটন– সিগন্যাল কথা বলে।
দুর্ঘটনার রেশ মেখে শয্যা বন্দী, আশঙ্কা- আশার মাঝে
আহ্নিক-বার্ষিক কাটে দুশ্চিন্তার ভোর দেখে। যন্ত্র সাথে
জীয়ন কাঠি হিসেব রাখে প্রতি পলের নিঃশ্বাস- প্রশ্বাসের।
ধীর থেকে ধীরে লয়ে ক্ষীণ হয় আশ্বাসী জীবন রেখা।
শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগে স্তব্ধ আয়ু – সিগন্যাল কথা বলে।
আসন্ন প্রসবা মাতৃত্বের যন্ত্রণার আভূষণের চীৎকারের
মাঝে- শল্য কক্ষের আলোর দিকে উদগ্ৰীব দৃষ্টি, চোখ
তোলে বারবার, সঠিক সময়ে সদ্যোজাতের অপেক্ষায়।
উদ্বিগ্ন মুখের ভিড়ে, সময়ের ব্যবধানে সুতীব্র জন্মের
ক্রন্দন ধ্বনি ভূমিষ্ঠ বার্তা দেয়– সিগন্যাল কথা বলে।
পথ্যে-নেপথ্যে সব কিছু বাঁধা আছে আজ মুঠোফোনে।
স্নেহের সুর, প্রিয় সম্ভাষণ, ভাবনার অবকাশ, বিশ্বের হাত
ধরে অনায়াসেই, দিয়ে যায় নির্ভরতার অবলম্বন, শুধু
প্রয়োজন সবুজ আলোর প্রতীক। জেনে নিতে অতীত-
বর্তমান-ভবিষ্যৎ নিত্যকালের– সিগন্যাল কথা বলে।
শুভ-অশুভে, ভালো-মন্দে, বিজ্ঞানের সাধনায়, জীবনের ধারাবাহিকতার় বার্তাবাহী সিগন্যাল– সিগন্যাল কথা বলে।