ছিন্নমস্তা
– সুজিত চট্টোপাধ্যায়
এটা তো শ্মশান ঘাট
এত জটলা কিসের গা?
তোলা চাই লো, তোলা।
ওমা, বলিস কি!
শ্মশানে আবার তোলা কি লা?
এখানে তো চিতেয় তোলা।
ও মরা, তোর জাত কি?
হায় হায়, মুখপোড়া বেয়াক্কেলে
মরার আবার জাত কিরে বজ্জাৎ?
চুপ কর গতরখাগি বেবুশ্যে,
ও মরা তো কি, তুই তো জ্যান্ত, শালি..
বল কি জাত,
বেজাত হলে বিশ মূদ্রায় রফা
বেরাম্ভন হলে অন্যকথা।
তোর কি জাত রে বেজম্মার পো
মরা ভেঙে খাস, নিলজ্জর নাতি,
যমের অরুচি ওলাউটো…
কবে মরবি তোরা, নিবংশ হবি কবে?
ভাবিস নে রে জ্বালামুখী
জেনে রাখ, আমরাই থাকবো
তোদের জ্বালাবো পোড়াবো খাবো,
আমরা রক্তবীজের ঝাড়, নিকেশ করবি
হা হা হা হা
রাজত্ব আমাদের, আমরাই রাজা রে…
তাই বুঝি? তবে এই দ্যাখ,
তোরা রক্তবীজের ঝাড়, আমি ছিন্নমস্তা..
এখানেই লেখা ছিল পুরাণ গাথা
এখানেই লেখা হবে নতুন কথা।
জাত বেজাতের ধ্বজাধারী…মুরুব্বি…
মর মর মর শ্যালের বাচ্ছারা,
হরিশচনদর তোদের পোড়াবে
হরিশচনদর ঘাটে…
নিখরচায়, নিয়ম ভেঙে, একদম নিখরচায়
বেজম্মা বজ্জাতের দল,
মনিস্যি বলনা রে হারামজাদারা
মনিস্যি বল ।
––––––––––––––––––––––––––
বেরাম্ভন > ব্রাহ্মণ। মনিস্যি > মানুষ।
শ্যাল > শিয়াল। হরিশচনদর >রাজা হরিশ্চন্দ্র।