ভালোবেসেছিল কেউ
-পারমিতা চ্যাটার্জী
নিস্তব্ধ নদীতীরে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে আছি
আমরা দুজনে গোধূলির শেষ বিকেলের ছায়ায়,
নদীটা যাচ্ছে বয়ে আমরা দাঁড়িয়ে আছি নীরবতার
সুগভীর আচ্ছাদনে।
দিনের আলো গেলো নিভে, পশ্চিম আকাশের লাল আভা মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
ক্লান্ত বলাকা ফিরছে নীড়ে
ধূসর দিগন্তের উন্মুক্ত প্রান্তর পেরিয়ে,
এ এক আশ্চর্য বিহ্বলতার আমেজ
ছড়িয়ে পড়ে নদীতীরে।
দেখে যাই শুধু নদীর পারে কপোত-কপোতীর মৃদু গুঞ্জন, হয়তো বা থেকে যাবে তাদের অলিখিত প্রেমের এক গভীর অনুভূতি।
আমরা দুজন দাঁড়িয়ে আছি নিঃশব্দে নিস্তব্ধ আধারে,
বলে যেতে চাই অনেক কথা, অনেক বিরহ ব্যাথার অনুভূতি,
পারিনা বলতে, বুকে হয়ে জমে থাকে আজকে দিনের কিছু কবিতা।
বুকে জমে আছে কবিতার কান্না, গোপন ব্যাথা,
তুমি কি শুনতে পাচ্ছ আমার এই কান্না!
তোমার এই উদাসীনতার দরজা ঠেলে আমি
যেতে পারছিনা তোমার কাছে,
পারছিনা পড়তে তোমার চোখের গভীর ভাষা।
তুমি ফিরে যাচ্ছ ধীরে ধীরে,
অমাবস্যার অন্ধকার কেটে আকাশে দেখা দিয়েছে
আধফালি চাঁদ নির্জন নদীতীরে,
আমি এখনও ভাবছি
হয়তো কেউ এসে বলবে একদিন
তোমাকে ভালবাসি,
কি আশ্চর্য দুঃসাহসিক আশা,
মনকে নিংড়ে ফেলছে যন্ত্রণায়,
একদিন হয়তো রুক্ষ শীতের ঝরাপাতার
মতন ঝরে যাবে আমার স্বপ্নের অনুভূতি,
কালের গতিতে ঝরে যাবে সবই
থেকে যাবে শুধু নির্বাক হৃদয়ের না বলা কথার গুচ্ছ।
নদীটা সেদিনও বয়ে যাবে, যেদিন আমার মন শান্ত স্তিমিত হয়ে মিলিয়ে যাবে অস্তগামী সূর্যের মতন পশ্চিমের লাল আকাশে,
সেদিন হয়তো তুমি মনে করবে কেউ আমাকে
ভালোবেসেছিল, নিঃস্বার্থ নির্মল ছিল সে ভালোবাসা, আজ আর নেই।