অণু গল্প- সোহাগ

সোহাগ

-অমল দাস

 

 

 

-বলছি এ বাড়িতে কেউ কি আছে, কথা শোনার মত? না কি আমি উপেক্ষিত? এই অনাহুতের দিকে একবার দেখলেতো উদ্ধার হই! শশাঙ্কবাবু রাগে সাপের মত ফুঁসতে ফুঁসতে একবার এ ঘর একবার ও ঘর একবার ডাইনিং-এ পায়চারী করছেন।

বৌমা শাশুড়ি রান্নাঘরে ব্যস্ত। শাশুড়ি সাড়া না দেওয়ায় বৌমা বলল- মা তুমি যাও, দেখো বাবা কি বলছে!

-তুমি থামো শুভ্রা! ও মানুষটা সারাজীবন ওই রকমই করে গেলো আমার সাথে।কেন করছে বুঝিনা ভাবছো… বলতে বলতে এগিয়ে গেলো।

কেতকীদেবী কর্তার ঘরে ঢুকে প্রশ্ন- কি, হয়েছে কি? সেই থেকে দেখি হুমড়ি-তুমড়ি করছো! লাজ-শরম কি খেয়েছ?

-হ্যাঁ… সে তো বহুকাল আগে বাসী-বিয়ের জলের সাথে খেয়েছি। এ আর নতুন কি?

-মানে! কি বলতে চাও?

-আর কি! সত্তরটা বছর শেষ হয়ে গেলো তোমার সাথে…

-মনে হয় জন্মেই একসাথে গাঁট বেঁধেছি…! কথা-বার্তা চিন্তা করে বলো না?

-কেন? এতো দিন তো শুনতাম চিন্তা করতে হবে না, আমি স..ব সামলে নেবো। এখন আমার চিন্তা কিসের?

– তা কেন? আমার দায়, আপনি তো অতিথি… বলি হুজ্জতিটা কিসের?

-আমি মানুষটা জ্যান্ত আছি যে! খিদে পায় তো না কি?

-মানে? আধাঘন্টাও হয়নি রুটি-তরকারি খেলে এরই মধ্যে… পেটে কি ইঁদুর ঢুকেছে?

– মাথা গরম করোনা! রান্না ঘরে হচ্ছে কি? একটা সুস্বাদু গন্ধ এলো!

-বুঝেছি! আগেই বুঝেছি এ কিসের যন্ত্রণা… 

মুখভার করে রান্না ঘরে চলে যান কেতকীদেবী।

বৌমা কৌতূহলী –কি হয়েছে মা?

-কি আবার? খাই রোগ…! দাও! একবাটি পায়েস দাও… গন্ধ পৌঁছে গেছে নাকে!

শশাঙ্কবাবু হাই-সুগারের রোগী। পায়েস পেয়ে খুবই আপ্লুত আবেগে- শোনো-না.. কেতকী রাগ করোনা! তুমি ছাড়া আমার অস্তিত্ব নেই। জানো তো কত ভালোবাসি…

-হয়েছে! সোহাগে আর বাঁচি না…  

 

  

Loading

2 thoughts on “অণু গল্প- সোহাগ

  1. বাহ বাহ, দারুন

Leave A Comment