Site icon আলাপী মন

কবিতা- সর্বভুক বাঙালি

সর্বভুক বাঙালি।
-শচীদুলাল পাল

 

 

খাদ্যরসিক বাঙালি চিনতে হলে
চেনো তারে ঝালে ঝোলে অম্বলে।
হরেকরকম পদ গোনো হেঁসেলে।
এসিডিটি নিয়ন্ত্রণে জেলুসিলে।
সর্বভুক নাই তার বাছ -বিচার।
আমানি আলুপোস্ত আম আচার।
ইলিশপাতুরি সর্ষে ইলিশ বা ভাজা
বড়ো ইলিশ কিনে আজ রাজা।
পুঁইশাকের চচ্চরি মাছের মাথায়,
নিমবেগুন শুক্তো ছেঁছড়া ডালনায়।
ইমলি ইডলি পিঠেপুলি সরু চুগলি
ডেলি লোকালে সাত সকালে বাঙালি।
রুই কাতলা কালবোস মৃগেল
সরপুঁটি মৌরালা বাটা সরখেল।
মাংসটা হয় যদি কচি পাঁঠা।
হাঁকপাঁক ভরপেট হয় খাওয়াটা।
বাঙালির পকেট ফাঁকা মাসান্তে টান
বাজারের থলি ভরে নিয়ে আন।
বাঙালির বারোমাসে তেরো পার্বণ।
পরবের নামে শুধু ভুরিভোজন।
পূজার নামে শুধু পেটপূজা
ফল মিষ্টি পায়েস ভোগেই মজা।
মোহনবাগান মানে গলদা চিংড়ি
ইষ্ট বেঙ্গলের ইলিশ পাতুরি।
উৎসবের নামে খাওয়ার বাহানা

জামাইষষ্ঠী ভাইফোঁটার খানাপিনা।
ইলিশ পাবদা চিতল চিংড়ির দর্শন
আমের শরবতে একান্ন পদে জামাইবরণ।
বিয়ে শ্রাদ্ধ অন্নপ্রাশন জন্মদিন
গেট টুগেদার বিজয়া সম্মেলন।
ভূরিভোজনে কবজি ডুবিয়ে খান
সেলাড থেকে পান পদ গুনে যান।
চপ কাটলেট ডাল কচুরি রকমারি
পোলাও ফ্রাইড রাইস তরকারি।
চাই তার খাঁসির মাংস যাঁচাই।
সাথে নিরামিষের পদও চেখে যায়।
মিষ্টি দই সন্দেশ রসগোল্লা মিঠাই
পাঁপড় চাটনি আইসক্রিম জলবোতল।
পেটে আর নেই জায়গা কি বলবো বল।
হয় যদি বৃষ্টি মুষলধারে ঘূর্ণিঝড়ে
ঘি খিঁচুড়ি মাছ দই আচার পেটভরে।
কাংকড়া শামুক গেড়ি গুগলি
চ্যাং গড়ই মাগুর পাঁক থেকে তুলি।
পালং মেথি মটরশুঁটি পলতা
ছোলা মটর শীতের সব শাক পাতা
উচ্ছে বেগুন পটল কপি মুলো
আলু পিয়াজ রসুন বিট গাজর কন্দগুলো।
বাঙালি ভুরিভোজে জুড়িমেলা ভার।
অতিভোজনে মানা করলেও নির্বিকার।

Exit mobile version