ভাষার গতি
অমরেশ কুমার
ভাষায় যত জটিলতা আসবে ভাষা ততো জটিল হবে । ভাষা যত সহজ সরল হবে ততই সর্বজনগ্রাহ্য হয়ে উঠবে; নতুবা জটিলতা থেকে পৃথক সত্তায় নতুন ভাষার আবির্ভাব ঘটবে ।
জটিলতার সুবিধা হলো নতুন ভাষার উৎপত্তি , কোন কিছুতে জটিলতা না থাকলে নতুন কিছু পাওয়া যায় না ।
অসুবিধা হলো ভাষার খন্ডীকরণ, ফলে পুরানো ভাষা অনেক সময় বিপন্নের মুখে পড়ে ।
বর্তমানে একাধিক ভাষা বিপন্নের সম্মুখীন । যে সকল ভাষায় আগে মানুষ কথা বলতেন এখন সেই ভাষার অর্থ প্রচুর মানুষ বোঝেন না । দীর্ঘকাল ধরে ভাষা সুপ্ত থাকতে থাকতে লুপ্ত হয়ে যায় । বিলুপ্ত ভাষা পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের ভাষাবিদরা একের পর এক গবেষণা চালিয়ে চলেন । বাস্তবে দেখা গিয়েছে এই গবেষণার ফল বইয়ের পেজ এ ছাড়া আর কোথায় ব্যবহৃত হয় না । কেননা সেগুলোর কোন কথ্য রূপ জন সম্মুখে ব্যবহৃত হয় না । ভাষার এই বহুবিধ গতির ফলে একাধিক ভাষার জন্ম হয়, যা থেকে জন্ম নেয় পৃথক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত জাতি । যা পৃথক সত্তার অধিকারী । যা মনুষ্যজাতির খন্ডীকরণ এর প্রধান হাতিয়ার । এই হাতিয়ারকে কেন্দ্র করে মানুষ নিজের সত্তা টিকিয়ে রাখার জন্য লড়াই করে চলে, যা উন্নয়নের গতিকে অনেক সময় স্তব্ধ করে দেয় ।
সুতরাং , ভাষার অগ্রসর এর পথে গতিও রয়েছে আবার বাধাও রয়েছে । ভাষাবিদরা যদি প্রথম থেকে ভাষার উপর পূর্ণ দক্ষতার সহিত বাধা গুলি উপলব্ধির মাধ্যমে সেগুলি দূর করার চেষ্টায় ব্রত থাকেন তাহলে ভাষার গতি বৃদ্ধি পায় এবং বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে ।।