মৌনতার ভাষা
-সুমিত মোদক
মৌনতারও এক ভাষা আছে , অবক্ত ভাষা ;
আছে স্বরলিপি , আছে ছবি ,
তবে বিমূর্ত ;
আশেপাশে এতো কলাহল , এতো শব্দ দূষণ ,
এতো অস্থিরতা ,
তার মধ্যে থেকেও মৌনতার ভাষা পাঠ মোটেই সহজ নয় ;
তবে , দীর্ঘদিনের সাধনায় রপ্ত করে নিয়েছে
মৌনতার ভাষা পাঠ , বিমূর্ত চিত্রের মৌন-কথন ,
তারাই খুঁজে নেয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
শেষ বছর গুলো ;
খুঁজে নেয় কবির না বলা কথা ..
সেখান থেকে জন্ম নিতে পারে
বাংলার আরেক অধ্যায় ,
আরেক ইতিহাস ;
যে কবি অখণ্ড ভারত চেয়ে ছিল ,
তাকেই আমরা দ্বিখণ্ডিত করলাম ;
আর , দেশটাকে তিন খণ্ড ;
দেশ মাতাকে খণ্ড খণ্ড করতে করতে আমরা যে কখন ভিতর থেকে খণ্ড খণ্ড হয়ে পড়েছি ,
নিজেরাই জানতে পারিনি ;
সে কারণেই , অখণ্ড শব্দটাই শুনলেই
আমরা কেমন যেন ভিতর থেকে
হিংস্র হয়ে উঠি ;
বার করি দাঁত , নখ , চোখ দুটো লাল টকটক করে ওঠে ;
হয়তো সে দিন কবি বুঝে ছিল
এই পোড়া দেশে আধ ঝলসানো মানুষ গুলো
একে অপরকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে ;
খাওয়াবে নতুন প্রজন্মকে ;
সে কারণেই কবি বাগরুদ্ধ …
আপোষহীন একজন মানুষ , বিদ্রোহী এক কবি ব্রাত্য ;
ব্রাত্য দেশের কাছে , সমাজের কাছে ,
সর্বপরি আত্মকেন্দ্রিক , স্বার্থপর মানুষ গুলোর কাছে ;
যে মানুষ গুলো কেবল মেকি ধর্ম নিয়ে বাঁচে ;
আর , ধর্মের বুদবুদ তোলে …
যেদিন তুমি মৌনতার ভাষা খুঁজে পাবে ,
যেদিন তুমি বিমূর্ত ছবি গুলোর পাঠ নিতে পারবে ,
সেদিন দেখতে পাবে , একজন কবি ,
একজন সৎ মানুষ কিভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারে
এই রাষ্ট্রশক্তির উপর , এই রাষ্ট্রযন্ত্রের উপর ।।