কবিতা- পাল্লায়

পাল্লায়
-সঙ্কর্ষণ

 

 

আমি জানি… এখন একটিও কথা না ব’লে
গম্ভীর মুখে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসবেন আমার বাবা।
আমাকে তিনি দেখেও যেন দেখবেননা।
আসলে তিনি চোখে দেখতে পাননা
তাই কাঁচেই কাঠিন্য ধ’রে রাখেন, আসলে ভীষণ ভঙ্গুর।

এই যে আমার হাতে পায়ে এতো ধুলো কাদা
মা নীরবে ঘরে নিয়ে যাবেন আমায়…
সারা সন্ধ্যে কথা না ব’লতে ব’লতে আমি যখন
কুঁকড়ে বিছানায় শুয়ে থাকবো, মা মাথায় হাত
বুলিয়ে দিয়ে ব’লবেন, “এমনটি আর না হয় যেন”।

সকাল হ’লেই দুধের গ্লাস হাতে মালীকাকার
আগাছা-নিধন দেখতে যাবো, হাঁ ক’রে দেখবো
সুন্দর ঘাসফুলগুলো নিড়ানির পানে চেয়ে
অপেক্ষা ক’রছে নিশ্চিহ্ন হওয়ার… কাকা ব’লবে
“ইয়ে দুনিয়া ইতনা বোঝ্ ক্যায়সে উঠায়েগি বেটা? “

চিলেকোঠার সিঁড়িগুলো ক্যাঁচকোঁচ ক’রে ওঠে
আমি মুখ নীচু ক’রে দরজায় দাঁড়িয়েছি আজও।
ওগুলি আগে পোক্ত ছিলো বড়ো…
বাবা, তুমি কি দেখতে পাচ্ছোনা আমায়?
মা, আমি তো আজ মজা পুকুরে ডুব দিয়ে এসেছি।

ভার সহ্য ক’রতে না পেরে আমি যে কুয়াশা দেখছি
সেই কুয়াশা আরেকটু থাকলে একবার জিজ্ঞাসা ক’রতাম,
“ইয়ে সিঁড়িয়া কিসকা বোঝ্ উঠা রহে হ্যায় কাকা? “

অজস্র ঘাসফুল অবাক বিস্ময়ে দেখছে
মাকড়সার ঝুল স’রিয়ে
ভেতরে ঢুকে প’ড়লো এক বৃহত্তর আগাছা…

“আর হবেনা, আর হবেনা” ব’লতে ব’লতে।

Loading

Leave A Comment