কবিতা

কবিতা- বসন্ত এসেছিল

বসন্ত এসেছিল
-অমিতাভ সরকার

 

লিপিকার সঙ্গে দেখা হয়েছিলো
বীরভূমের এক নির্জন রাস্তায়।
দু’পাশে গাছ ছিল; কৃষ্ণচুড়া ছিল, রাধাচূড়া ছিল আর ছিল সুন্দর একটা কাজু গাছ।
রাস্তার একপাশে প্রশস্ত মাঠ। কাঁকর বিছানো লাল মাটি।
অদূরে হাটছিল। ওখানে পলাশ, শিমুল ছিল।
একপাশে শান বাঁধানো বটগাছ ছিল। হাটে বেচাকেনা ছিল।
সাঁওতাল মেয়েদের ভিড় ছিল। কুচ কুচে মাথায় চুল ছিল। চুলের বেনিতে বনফুল ছিল।
হাটে কাঁচের চুড়ি ছিল, নানা রংয়ের মাথায় বাঁধা ফিতে ছিল, ছোট্ট ছোট্ট পুতুল ছিল।
তাল পাতার টুপি ছিল। হাটে বিক্রির জন্য কচু ছিল, আলু বেগুন পেঁয়াজ ছিল, পাঁঠার মাংস ছিল, ক্যানেলের কুচ মাছ ছিল।
আর ছিল আদিবাসী মেয়ের কাছে পাকানো শন। চটে বিছানো খেড় । মুড়ি, বেগুনি, চপ ছিল। সবার মুখে অনাবিল হাসি ছিল। বাউলের একতারা ছিল। মুখে প্রেমের গান ছিল।

লিপিকার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। গায়ের রং কালো ছিল। সুন্দর দাঁতের হাসি ছিল। মিষ্টি মুখ ছিল। কথার মধ্যে আবেগ ছিল। ভালোলাগা ছিল। প্রেমের আবেশ ছিল। শরীরে উষ্ণ আতর ছিল। আকাশ নীল ছিল। শিমুল মেশানো বাতাস ছিল। খড়িমাটির সাদা আবির ছিল। পেয়ারা তলায় হৃদয় দোল খেয়েছিলো।
এমন সময় বাস এসে দাঁড়ালো। বাসে উঠতে উঠতে বিদায়ের হাত নড়ে ছিল।
লিপিকার চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা জল গড়িয়েছিল।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page