অন্তসলিলা
-রাণা চ্যাটার্জী
মায়ের কোলে গা ঘেঁষে
আদর খাওয়ার অছিলায়
আশ্রয় নিতে যাওয়ার মুহূর্তে,
মায়ের স্নেহে ফুঁপিয়ে উঠলেই
মা মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন ,
মনি-কাঁদে না রে নদী হয়ে যা,
ওতেই পরম শান্তি মেয়েদের।
ছোটবেলায় দাদু বলতেন”তুমি দিদিভাই দুগ্গামা”
বাস্তবে স্বামীর ঘরে দুবেলা ঝামেলা অশান্তিতে
বিয়ের বছর গুলোই কেবল ঘুরছে কিন্তু
সৌভাগ্যের চাকা পাঁকে বরং ক্রমশ তলিয়েই!
মা কে হেঁকে বিধু মাস্টারের গলা
“ওগো বৌমা, মেয়েকে আরো পড়িও
ওর মাথাটা খুব পরিষ্কার”
মনে পড়ে যায় হাফ ইয়ারলি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ
নম্বর থেকে তিন নম্বর পিছিয়ে থাকার কষ্ট,
দু রাত না খেয়ে সে কান্নার মূল্য কি তবে!
কি দরকার ছিল তবে বাবার কষ্টের সংসারে
কত জিদ করে এত দূর অব্দি পড়াশোনা!
সব কি তবে এই ভাবে হেঁসেল ঘরকন্নায় অস্তমিত
তবু অন্তঃসারশূন্য উপলব্ধি,প্রেম-ভালোবাসা
বিহীন অভিনয়ে দুঃখ নদী জীবন নিঃশব্দে বয়।
যে যত সয়,দুখ ততো রয় গভীরতা ব্যর্থতা ,
তাবলে এভাবে নীরবে কি কেউ বয়!
যে নদীর গভীরতা বেশি ,
যার কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা প্রবল,
তার কষ্টগুলো অন্ত সলিলা হয়ে বয় নিঃশব্দে!
জমতে থাকে পাহাড় প্রমান বোঝা,
নুড়ি পাথর গ্লানি,মুখ বুজে আঁকাবাঁকা পথ।
যে নারী সাহসে এগোয়,বলে একলাই পারি
একা হাতে সামলায় চাপ,সত্যি বলিহারি।
যে কাজ করে কতো, আঁচড়ে দুঃখের ক্ষত
জীবন এভাবেই হিমশীতল থেকে বরফে অবিরত।