কবিতা- সীমাহীন ভালোবাসা

সীমাহীন ভালোবাসা
-পারমিতা চ্যাটার্জী

 

 

বিরহ বেদনার করুণ সুর ভাসছে আকাশে,
বাতাসও অচঞ্চল দীর্ঘশ্বাসের শ্বাস ফেলছে,
কেনো এতো দুঃখ!
দুঃখ তো মনের এক অজানা নদী,
সেই নদী দিয়ে তরী বাইতে বাইতে
পৌঁছে যাই কতো অজানা গন্তব্যে
তার নামই জানা নেই।
মনের জানালাটা খুলে দিলেই
প্রকৃতি এসে সামনে হেসে দাঁড়ায়।
সকালের নীল আকাশে উড়ে চলেছে
পাখিরা, তাদের ভয়হীন ডানা মেলে,
গোধূলি বেলায় ফিরবে নীড়ে,
নীড় ভেঙে গেলে বাঁধবে নতুন বাসা।
মৃত্যুভয় নেই তাদের, তারা যে স্বাদ পেয়েছে
এক অনন্ত অসীমের যেখানে বেদনা স্পর্শ করেনা।
মন কি বন্দী থাকতে পারে চারদেয়ালের মধ্যে!
বন্দী থাকে শুধু শরীরটা।
মনও ঘুরে ঘরে বেড়ায় ক্লান্তিহীন এক অনন্তে,
যেখানে চিন্তা আছে,ভয় আছে প্রিয়জনের জন্য আছে আকুলতা, আছে রোজকার নামচা কর্মব্যস্ততা।
তারই মধ্যে মন দেখে গাছে আজ কটা ফুল ফুটলো!
নিজে হাতে তৈরি বারান্দার একধারে যে ফুল ফুটিয়েছে, তাদের বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা
ক্লান্ত বিষণ্ণ মনে আনে অনাবিল সৃষ্টির আনন্দ।
গায়ক করে নতুন সুরের সৃষ্টি,
শিল্পীর তুলিতে ফুটে ওঠে মনের চিত্র,
কবির কলমে আনে ভাবের প্রকাশ।
মন বেঁচে থাকে ভালোবাসার এক অন্তহীন
যাত্রার মধ্যে দিয়ে।
মন তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে উড়ে যায়
অজানার রহস্য আস্বাদনে,
বিরামহীন চিন্তার মধ্যে ছড়িয়ে থাকে তার ভালোবাসা।
মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে ডাক্তার যুদ্ধ করে
একটি প্রাণকে বাঁচানোর জন্য।
সেবাময়ী সিস্টারের সেবায় মৃত্যুকে জয় করে
যখন রোগী ফিরে যায় তার গৃহে
তখন আনন্দে তার চোখের পাতা ভিজে ওঠে
একটি প্রাণ দানের আনন্দে,
সেখানেই তার ভালোবাসার আনন্দ।
ভালোবাসার আনন্দে মন ছড়িয়ে যায় দীর্ঘ ক্লান্তিহীন পথের বাঁকে বাঁকে, কখনও নদী হয়ে
বয়ে চলে, কখনও মরুদ্দান ফুল ফোটা দেখে।
তাই ভালোবাসা সীমাহীন বেদনাহীন এক প্রবাহমান নদী,
যা শুধুই বয়ে চলে নোঙর ফেলেনা কোথাও।

Loading

Leave A Comment