মনের গভীরে
– শুক্লা রায় চৌধুরী
গরম কফির মগ হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে বসে কুয়াশা ঘেরা পাহাড় দেখতে ভীষণ ভালো লাগছিলো রাইয়ের। কোলাহল বর্জিত এমন একটা নির্বাসন চাইছিল বহুদিন ধরেই।শুধু হাওয়ার আওয়াজ খেলে বেড়াচ্ছে সামনের পাহাড়ের ঢালগুলো বেয়ে, সাথে পাখির কিচিরমিচির। প্রাণ মন সব জুড়িয়ে যাচ্ছে। কত না বলা কথা আছে নিজেকে বলার; এখনই বলে নিতে হবে না হলে আবার ও চলে আসবে, কিছুই বলা হবে না তখন। এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ করে সব চোখের সামনে ঘোলা হতে লাগলো? পাখির কুজন এখন হাহাকার হয়ে বিঁধছে কানে।উফঃ কি কষ্ট। মিশকালো অন্ধকারের পর্দাটা ছিঁড়ে আলো আসতে শুরু করছে। তার মানে আবার সেই কদর্য মানুষটা আসছে! ঠিক তাই ! সারা গায়ে রক্ত মেখে দাঁত বার করে হাসছে বিকাশ রোজের মত। এখনই ওই নোংরা হাতে আমাকে ছোঁবে। খুবলে খাবে আমাকে তিলে তিলে। তারপর আস্তে আস্তে মিশে যাবে আমার মধ্যে। আমি আর ও আলাদা থাকব না, এক হয়ে যাব রোজের মত।
‘ মিস দত্ত মিস দত্ত, তাকান। এই তো তাকাচ্ছে।’
চোখ খুলে নিজেকে পাহাড়ের এক জঙ্গলে খুঁজে পেল রাই।
“কেমন লাগছে এখন? আরে ভয় পাচ্ছেন কেন? আমি বিকাশ নই, ডক্টর দাস। বিকাশ আপনার মনের তৈরি করা মানুষ ছাড়া কিছু না। আপনি এটা যত বুঝতে পারবেন ততো তাড়াতাড়ি সেরে উঠবেন।”
কথার উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা নেই রাইয়ের খুব ক্লান্ত লাগছে রোজের মতই। ঘরে ফিরে লম্বা একটা ঘুম চাই ওর। কালকে আবার এই একই ঝড় বইবে। ডক্টর দাসের কথা খুব বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে কিন্তু বিকাশ যে আছে; রোজ আসে ওর কাছে সেটা কেউই বুঝবে না।