একটা জীবনের গল্প
– পারমিতা ভট্টাচার্য
ফুরিয়ে যাবার আগে চলো না বন্ধু
আর একবার যাই বুড়ো বটের তলায়
ছোটবেলার মতো খেলি,পুতুলের বর বউ
ঘুরি আবার চুপি চুপি পীর সাহেবের মেলায়।
চলো না আবার ভাঙা মন্দিরটার দেউরিতে
তুই তুলে ধরবি আমার ঘোমটা টানা মুখ
তোর আঙ্গুলে দেবো ছোট্ট একটা কামড়
চাঁপার গন্ধে থাকবে মিশে আমাদের সেই সুখ।
আর একবার যাবো ওই নদীটার কাছে,
যেখানে বটের ছায়া নদীর বুকে আলতো করে পড়ে
ছুটতে ছুটতে হারিয়ে যাবো গোঁসাই বাবার বনে
হারান মাঝির নৌকায় যাব ভেসে কোথাও দূরে।
আজও বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে রেখেছি চিঠি
শাড়ির খুঁটে রেখেছি বেঁধে আগুনে প্রেমের কথা
পায়ের নূপুরে আটকে রেখেছি ফেলে আসা সব ঝড়
যদিও বুকের মাঝের উত্তাল নদী আজ ক্ষীণস্রোতা।
আজ তুই অন্য কারো পুরুষ, অন্য কারো প্রেম
অন্য কারো ছবি ভাসে তোর গভীর চোখের তারায়
আমি জানি, বিরহই প্রেমের পূর্ণতা আনে শুধু
তবু বলতে পারিস কি দোষ ছিল আমার ভালোবাসায়?
ফুরিয়ে যাবার আগে, চোখে ভাসে তোর মুখ
অন্তিম সময়ের জানান দেয় দ্রুত পড়া নিঃশ্বাস
অপেক্ষা করি মনে মনে শুধু একটা পরজন্ম সুখের
বিষাদ ছুঁয়েছে আমায়, কে রোখে আমার সর্বনাশ।।