পৃথিবী আবার শান্ত হবে..
– রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
অতীত- বর্তমান- ভবিষ্যত কালের এই তিনের আবর্তে জীবন চলছে, জগৎ চলছে। অতীত স্মৃতির কোলাজ। ভবিষ্যত বাঁচে আশা-ভরসার স্বপ্ন দু’ চোখে নিয়ে। আর বর্তমানের সাথে বেঁচে থাকার কথা, সমসাময়িক হাসি-কান্না-সুখ-দুঃখ ভীষণ ভাবে জীবন্ত। এড়িয়ে যাবার উপায় নেই কোনোমতেই। গুরুদেবের কথায়,”মনেরে আজ কহ যে, ভালো- মন্দ যাহা কিছু আসুক সত্যকে লও সহজে..” কিন্তু আজকের বর্তমান! বড়ো অজানা আতঙ্কের। ভয় লাগছে বর্তমানে, তবুও ভবিষ্যতের চোখ জুড়ে থাক আশার আলো।
আশ্চর্যজনক ভাবে বিশ্বপ্রকৃতিও যেন এই বর্তমানের আবরণ খুলে রেখে ফিরে গেছে নিজের সুন্দর অতীতে। পশু- পাখী, নদ- নদী যেন আবার আগের মতো হাসছে, খেলছে। প্রতিদিনের ভোর রাত যেন মায়াবী চোখ মেলে চায়। সেই মায়াবী আলো ঘেরা ভোরে বন্দী মনটাও চাইছে ফিরে যেতে সেই অতীতে- যেখানে মায়ের আঁচল ছিল একান্ত আশ্রয়। মায়ের গলার স্বরে ছিল দুরন্ত প্রশয়। সঙ্গীসাথীদের সাথে কাটিয়ে আসা চঞ্চল কৈশোর বেলা- লুকোচুরি, কাটাকাটি, ছু কিত্…কিত্.. সবকিছু যেন দু’ হাতের মুঠোয় ধরতে ইচ্ছে করছে। বৈশাখী অলস দুপুর, গল্পের বই সাথে বড়দিদার আচার, আমসত্ত্ব। টক- মিষ্টি সব স্মৃতি ঘুরছে মনের চোরাগলিতে। শীতের দুপুরে রোদে বসে ঠাকুমার কাছে মহাভারত, রামায়নের গল্প শোনা। সন্ধ্যায় বাবার কাছে পড়াশোনা।
সারাদিনের হুটোপুটির শেষে ক্লান্ত হয়ে আবার মায়ের আঁচলে ফিরে আসা। সব মা যেন আঁচল পেতে বসে থাকেন, তাঁর শিশুর শৈশব- কৈশোর আঁচল বন্দী করে রেখে দিতে। সন্তান তো পাখীদের মতোই। বড়ো হলেই নিজের বাসা গড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর ‘মা’? ‘মা’ তখন তাঁর আঁচল থেকে ঘ্রাণ নেন তাঁর সন্তানের। তাই আমরা যতোই বড়ো হয়ে যাই না কেন, মায়ের আঁচলে আমাদের শৈশব মাখা থাকে। মায়ের চোখে কখনো তার সন্তান বড়ো হয় না। ‘মা’ আমাদের চিরদিনের অমলিন আশ্রয়।
থেমে যেতে ইচ্ছে করছে সেই ফেলা আসা দিনগুলোতে। যখন বর্তমান আর জীবন মিলেমিশে চলতো চেনা সঙ্গীর মতো। কিন্তু আজকের অজানা বর্তমানে চোখ মেলতে বড়ো ভয়। শুধু একটাই কথা বিশ্বাসী মন্ত্র আজ মনের গহীনে, “একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে.. “
যাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পৃথিবী শান্ত করার কাজে ব্রতী হয়েছেন এই দুঃসময়ে- অন্তরের সবটুকু শ্রদ্ধা নিবেদন করি। ঈশ্বর মানি- তাই তাঁর কাছেই প্রার্থনা জানাই, তোমার সাহসী সন্তানদের তুমি রক্ষা করো।
আলাপী মনের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা, শুভকামনা। শুভ হোক আগামী।
বাহঃ ভীষন মন ছোঁয়া লেখা। ভালো লাগলো খুব…
সঞ্জীবনী সুধা। বেশ ভালো লাগল ।
ধন্যবাদ
ধন্যবাদ 🙏
দারুণ বললে দিদি।ধন্যবাদ।
ভালোবাসা একরাশ।❤️
ভীষণ কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা । পুস্তকে পঠিত ইতিহাস এভাবে চোখের সামনে হবে তা হয়তো ভাবিনি কখনো। বহু শিক্ষা দিয়ে গেল বর্তমান আমাদের সমাজকে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা যোদ্ধাদের সুস্থ রাখো, সকলের ভালো করো আর এই ঝড় থামিয়ে দাও।
আশায় বুক বেঁধে রাখা.. শুভ হোক সবকিছু, সবটুকু।