অব্যক্ত প্রেম
– সুজিত চট্টোপাধ্যায়
বুক খোলা আস্তিন গোটানো শার্টে
তোমাকে বেশ লাগে।
সোনালী রোদ লাগা মুখে
কালো রোদচশমা, ঠোঁটে লম্বা সিগারেট,
অসাধারণ।
রক্তকরবী ঘেরা বারান্দায় নায়ক।
রাস্তার এপারের খোলা বারান্দায়
সাজহীন সাধারণ মেয়েটা তোমাকে খোঁজে,
সাঁঝনামা গোলাপি বিকেলে,
জনহীন দুপুরে প্রতিদিন।
কে জানে কোথা থেকে একজোড়া শালিক
খবর পেয়েছে গোপন দৃষ্টি অভিসারের।
মাঝের রাস্তা পেড়িয়ে, কিচির মিচির করে
মিঠে আলোয়, এ বারান্দা থেকে সে বারান্দা
তাদের সে কি উৎফুল্ল দুরন্ত ওড়াউড়ি,
যেন একটা প্রেমসেতু বেঁধে ফেলবে এক্ষুণি
এপার ওপারের ব্যবধান দেবে ঘুচিয়ে নিমেষে।
ওরা তর সইতে শেখেনি, পাখিদের এই স্বভাব,
এসো ভালবাসার বাসা বেঁধে ফেলি
শাবকের চোখ ফোটা আস্তানা প্রকৃতির কোলে।
সেদিনও বেশ লাগছিলো তোমাকে,
নীল টিশার্ট সাদা ট্রাউজারে, গোধূলি আলোয়
তুমি যেন প্রেমময় কবিতার অলংকার।
রাস্তার এপারে খোলা বারান্দায় তখনও
সাজহীন সাধারণ মেয়েটার একজোড়া মিঠেচোখ।
যদিও রক্তকরবী ঘেরা বারান্দায় আজ অন্যছবি,
মুগ্ধ করা নায়কের পাশে লাস্যময়ী নায়িকা।
কে..কে, ও…?
আচমকা আকাশ ঘনিয়ে এলো বৃষ্টি।
এলোমেলো বাতাসে উড়ে এলো চোখঢাকা বালি
কপোলকল্পনা ঢাকলো কালো কেশরাশি ।
কেউ জানলো না, কাজলহীন ভিজে চোখের কথা
কিংবা মেঘ গুড়গুড় ভাঙা বুকের ব্যথা।
শুধু গরহাজির থাকলো
সেই দু’টি ব্যস্ত শালিক, যারা..
প্রেমসেতু বাঁধতে চেয়েছিল দু’টি অজানা
অব্যক্ত প্রেম বারান্দায়।