Site icon আলাপী মন

অণুগল্প- তৃষ্ণা

তৃষ্ণা
– সোমনাথ বেনিয়া

 

 

স্থান চেন্নাই। পুলক আর সুকান্ত গেছে রেলের পরীক্ষা দিতে। তারা যে হোটেলে উঠলো সেখানে পরিচয় হলো অবনীর সঙ্গে। অবনী থাকে সোদপুরে আর পুলক ও সুকান্ত বেলঘড়িয়ায়। ফলত প্রবাসে স্বজাতির লোক পেয়ে দু-পক্ষ‌ই আনন্দিত। নির্দিষ্ট দিনে তিনজনের পরীক্ষা হলো। কাকতালীয় ভাবে এক‌ই স্কুলে। ফলত একসঙ্গে যাওয়া, আশা এবং থাকায় তাদের মধ‍্যে সাময়িক ভালোলাগার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।
পরীক্ষার পরের দিন অবনীর বাড়ির ফেরার টিকিট। ওরা তার দু-দিন পরে ফিরবে। ফেরার রাতে অবনী ট্রেনে বসে আছে। সুকান্তর মন খারাপ না হলেও পুলক আর অবনীর মন কিছুটা উদাস হয়ে আছে। ক্ষণিকের ভালোলাগা অনেক সময় মায়া রেখে যায়। হঠাৎ অবনী বলে – আমাকে একটা জলের বোতল এনে দেবে।
– হ‍্যাঁ বলেই পুলক দোকানের দিকে দৌড়ালো।
জল আনতে পুলকের কিছুটা দেরি হচ্ছে দেখে সুকান্ত তাকে খুঁজতে বের হলো। ট্রেনের হর্ন বেজেছে। দেখা গেল পুলক হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে এসে অবনীর হাতে জলের বোতল তুলে দিয়ে বললো – টাকা লাগবে না।
এদিকে সুকান্ত এদিক-সেদিক ঘুরে পুলকে শেষে দেখতে পেয়ে ধমক লাগালো কারণ তারা সঙ্গে করে তাদের টিকিট আনেনি। যদি চেকার ধরতো! পুলক বুঝতে পারে। তবু তার আনন্দ যে সে অবনীর তৃষ্ণায় জল দিতে পেরেছে কিন্তু পুলকের চোখে-মুখে বিচ্ছেদের যে তৃষ্ণা জেগে আছে তা হয়ত সুকান্ত বুঝতে পারলো না …

Exit mobile version