নেমকহারাম
– সুজিত চট্টোপাধ্যায়
-ও নাটার মা, ঘরে আছো নাকি?
নাটার মা তখন সবে দুটো আলু আর দু’টাকা কিলো চাল ধুয়ে কাঠের জ্বালে হাঁড়ি চাপিয়েছে। সারা দিনরাতে, এটুকুই জোটে কোনও প্রকারে। হাঁক শুনে বেঁকে বেঁকে দরমার ফাটা দরজার পাশে এসে দাঁড়ালো, চোখ কুঁচকে মদনের মুখের দিকে তাকিয়ে, বিরক্ত স্বরে খেঁকিয়ে উঠলো,
– আরে এই হারামজাদা, তোকে হাজার বার বলেছি না.. আমাকে নাটার মা বলে ডাকবি না।
মদন একটু থমকে গিয়ে বললো, – ও..হ্যাঁ, তা-ই তো…তারপরেই বললো, বেশ তা না হয় বলবো না, কিন্তু কী বলে ডাকবো বলো দেখি? এদ্দিনের অভ্যেস, ফস করে পালটে ফেলা যায়?
নাটার মা তেজ বাড়িয়ে ময়লা থানের ছেঁড়া আঁচল কোমরে জড়াতে জড়াতে তিরিক্ষি হয়ে বললো,
– যা মুখে আসবে তাই বলবি। যা খুশি তাই। ডাইনি রাক্ষসী পেত্নী, ঘাটের মরা যা খুশি বলে ডাকবি। একটু থেমে, প্রদোষ নিঃশ্বাসে বুক ভরে নিয়ে, গলায় কাঠিন্য এনে বললো, ‘যে সন্তান, বউ পেয়ে মাকে তাচ্ছিল্য করে, জঞ্জালের মতো ফেলে দিয়ে পালায়। ভুলেও একটা খবর পর্যন্ত নেয় না, তার নাম, মা ডাকের সঙ্গে জুড়ে দিসনি বাপ। পবিত্র মা ডাক নোংরা হয়ে যাবে। নেমকহারামের বিষে, বিষাক্ত হয়ে যাবে।’
সুন্দর। ভালো লাগা
সকল বন্ধুদের জানাই আমার আন্তরিক শুভকামনা।
আলাপী মন এর জন্য দিলাম একরাশ ভালবাসা শুভেচ্ছা।
খুব ভালো লাগলো, এই অনুতেও সমাজের অনেক কিছুই আছে শিক্ষার ।