বন্দী জ্যোৎস্না
-রীণা চ্যাটার্জী
জ্যোৎস্না রোজ একা হাঁটে রাতে,
ফুরালে রাত, হারায় সে প্রতি প্রাতে
কায়া ছেড়ে এসেছিল নেমে পথে
ছায়া পারে নি আর ফিরে যেতে।
বহু যোজন তফাতে দেখে অসহায় চাঁদ
তবুও বাড়িয়ে দেয় রোজ আবেগী হাত
পৃথিবীর বুকে ভিন্ন নীতি, ভিন্ন মত
খুঁজে পায় না শশধরে ফেরার পথ।
দুধের বাটি, কাজল টিপে মায়ের ভালোবাসা
নির্ভরতা আর প্রশয়ে শিশুর ফোকলা হাসা,
চাঁদ মামা ডাকাডাকি, লুকোচুরি খেলায়
জ্যোৎস্না অবাধে মায়ের আঁচলে হারায়।
হঠাৎ ভেসে আসে কানে উচ্ছল হাসি,
ফিরে দেখে যুগলে বসে পাশাপাশি
ভালোবাসার আশ্রয়ে, নিবিড় ছায়ায়
আকুল কৌমুদী আবারো পথ হারায়।
চারিধারে আঁধার ঘনায়, মনে বড়ো ভয়,
সাথী হবে আজ? অজানা পথিক শুধায়।
ভাবে নি চন্দ্রিকা, নিমেষে হয়েছে সাথী
হাঁটা পথে পেরিয়ে গেছে লক্ষ শশীরাতি।
পথচলা, খুঁজে পাওয়া, সুখী-অসুখী মায়ায়
রাত রোজ শেষ হলে, ইন্দু একা ফিরে যায়।
আশা রাখে, কাল চন্দ্রিমা ফিরবে আকাশে
পায় না ফেরার পথ ধরণীর ভারী নিঃশ্বাসে।
সাথী হারা বিধু’র দু’নয়নে ঘেরে অশ্রুকণা
শিশিরের রূপে অশ্রুতে স্নাত হয় জ্যোৎস্না।
দিন যায়, মাস যায়, বছর আর শতাব্দী
ধরণী মাঝে বিধু-হাসি বন্দী আজ অবধি।