“খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে..”
“খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে..”
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
অবতারণাহীন রোজনামচা বিগত কয়েক দিনের। হয়তো বেঁচে যাবো, কিংবা থাকবো না এই পৃথিবীর মাঝে। অসুস্থ পৃথিবীতে বড়ো ভয় এখন, আতঙ্ক ছেয়ে আছে মনে। অদ্ভুত এক সময়ে যখন সবসময় মনকে বোঝাতে হয়- ভালো হবে সবকিছু.. ভালো হবেই। তবুও মনে একটা ‘কিন্তু’ থেকে যায়। থেকে যায় অবিশ্বাস।
ভেবেছিলাম অজানা- অচেনা পর্বটা পুরোনো সুখস্মৃতির জালে জড়িয়ে কাটিয়ে দেবো। হচ্ছে না, আর সম্ভব হচ্ছে না। এখন মনে হচ্ছে.. প্রিয়জনের মুখ দেখি না কতদিন। কত কাজ পড়ে আছে.. কিন্তু কতোটা পথ আরো আছে সেটাই জানা নেই।
শিখলাম-দেখলাম নতুন অনেক কিছু, গণ্ডীবদ্ধ জীবনে- সকালটা ধরা দেয় কি সুন্দর মায়াবী প্রকৃতির হাত ধরে। পাখী-গাছ- আকাশ সব নিয়ে প্রকৃতি রোজ যেন নব উদ্যোমে সেজে উঠছে। মন খারাপের মাঝে অন্যরকম ভালোলাগা। তবে কি অসুস্থ প্রকৃতিকে সুস্থ করতেই পৃথিবীর এই অসুখের সাজ? মানব সভ্যতার নৃসংশতার তাণ্ডবের মাঝে অঘোষিত, অসম যুদ্ধ। কেমন আছো পৃথিবী তুমি? খুব জানতে ইচ্ছে করে। কবির অঙ্গীকারের দায়বদ্ধতা নিয়ে এ পৃথিবীকে নবজাতকের বাসযোগ্য করে যাবে তো? আমরা পারিনি মনে রাখতে। ক্ষমতা, লড়াই, দ্বন্দ্বের জের টানতে এতো ব্যস্ত ছিলাম যে, ভবিষ্যতের কথা ভুলে ছিলাম। ভুলে ছিলাম সহ্যের সীমা আছে। তার পরিণাম কি আজকের অসহায় জীবন যাপন? পরিণতি? জানা নেই। মনে হচ্ছে হয়তো বিজ্ঞান একটা প্রচেষ্টা, অসীম জ্ঞানের ভাণ্ডার কিন্তু তারও পরিধি আছে, সীমাবদ্ধতা আছে। অপরদিকে আছে এক অমোঘ শক্তি, তার কাছে আমাদের সম্পূর্ণ মানব সমাজের গর্ব, অহঙ্কারকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া শুধুই এক খেলা। কবির উপলব্ধিতে:
“খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে/ প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা
নিরজনে প্রভু নিরজনে।”
শুভ হোক আগামী। আলাপী মনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা সকলের জন্য।


2 Comments
Jit sah
সময়োপযোগী এবং আত্ম বিশ্লেষনধর্মী । ভালো লাগলো ম্যাম। কিন্তু একটা বিষয় এমন করে কি আমরা কখনও ভেবে দেখেছি যে সবকিছু থমকে দিয়ে এই পৃথিবী টাইম মেসিনের মত অনেকটা সময় আমাদের বাগিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য উপহার স্বরুপ দিয়েছে….
বাস্তবিক ক্ষেত্রে আমরা হয়ত একটা সাময়িক চাপান উতোর -এর মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে চলেছি, তবু একটা শিক্ষা তো দিয়ে গেল।।
রীণা চ্যাটার্জী
অবশ্যই পৃথিবী আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে, শেখার চেষ্টা করছি হয়তো। তারপরেও অনেক ‘কিন্তু’ থেকেই যায়- সেই ‘কিন্তু’ আমাদের অসহায়তার, আমাদের অক্ষমতার, আর তখনই হয়তো মনে হচ্ছে, “খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে..’ এই প্রলয় তিনিই পারেন থামাতে। সময়ের অপেক্ষা- আশার আলো দেখতে। অশেষ ধন্যবাদ বন্ধু।