“সোয়াপিং “
– উজ্জ্বল সামন্ত
সোয়াপিং শব্দটার প্রায় সকলেই পরিচিত। Swapping (verb) যার বাংলা মানে দাঁড়ায় বদলা বদলি করা। অদল বদল /বিনিময় অনেক কিছুর হয়ে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে যেকোনো পণ্য কেনাবেচা মূল্যের বিনিময়ে । কিন্তু সম্পর্কের বিনিময়, তাই আবার হয় নাকি ! এটা ভাবলে ভুল হবে না আধুনিক সমাজে। এরকমই এক বাস্তব গল্পের শুরু হয়-
ওরা দুজন স্কুলের বন্ধু । স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে একজন কলেজ ইউনিভার্সিটিতে ডিগ্রি নিয়ে কর্পোরেটে উচ্চপদে আসীন। মোটা মাস মাইনে সমাজের এলিট সম্প্রদায়ের একজন হয়ে উঠেছে অতীশ। দ্বিতীয় বন্ধু শিল্পী মানুষ। শিল্পই নেশা ও পেশা সোহমের।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়াতে কারোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল না। দুজনে আলাদা কলেজে পড়তো। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় অফিসের গাড়িতে সোহমের ধাক্কা লাগে। বন্ধুকে নিয়ে হসপিটালে ছুটে যায় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সোহমকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়ে অনিশা দরজা খুললে স্বামীকে আহত অবস্থায় দেখে উদ্বিগ্ন হয়। অনিশা আধুনিকা পরমাসুন্দরী, ভাগ্যবশত ওর এক্স ফ্রেন্ড। ওর পীড়াপীড়িতে এক কাপ চা খেয়ে বাড়ি ফেরে। রাত্রে অনীশাকে মনে করে অতীশ । পরদিন ফোনে বন্ধুর খবর নেয় ও নিজের বিবাহ সংবাদ জানায়। সোহম ও স্ত্রীকে নিয়ে অতীশের বিয়েতে আসে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে। প্রায়ই যাতায়াত লেগেই থাকে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়।
কিছু মাস পর অতীশ প্রস্তাব দেয় সোহমকে যে ওয়াইফ সোয়াপিং এর। প্রথমে সোহম হেসে উড়িয়ে দেয়, অতীশের কথা সিরিয়াসলি নেয় না। অনীশার প্রতি আকর্ষণে বারবার প্রস্তাব দেয় অতীশ। সোহম অনীষাকে ব্যাপারটা জানায়। অনিশা কোন উত্তর দেয় না। হঠাৎই অনীশার একমাত্র ছেলের হার্ট ব্লক নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। বিপুুল অর্থ ব্যয়়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য সোহমের নেই।
অদৃষ্ট বা নিয়তির পরিহাসে আত্মীয় স্বজনের কাছে সাহায্য না পেয়ে কোটিপতি বন্ধুর কাছে ধার নিয়ে ছেলেকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরে।
দুই বন্ধু কিছু মাস পর বেড়াতে যায় পাহাড়ে নিজের পরিবার নিয়ে। হোটেলের ঘরে বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়লে, চার বন্ধুর মদের ঠেকে আবার সেই কথা ওঠে। নেশার ঘোরে উভয় পক্ষ রাজি হয়ে গেলে ওয়াইফ সোয়াপিং এর কল্পনা বাস্তব রূপ নেয় । পরদিন সকালে সোহম আর অনীশা অতীশ ও তার স্ত্রী মলিনাকে না জানিয়ে স্টেশন থেকে তৎকাল টিকিট করে বাড়ি ফেরে।
কিছু মাস কেউ কারো সঙ্গে দেখা হয় না। মধ্যবিত্ত পরিবারে মদ্যপান কে বিলাসিতা ভাবা হয় সেখানে সোহম…! আত্মগ্লানিতে ভুগে মনে মনে দোষারোপ করতে থাকে নিজেকে । কেন সে রাজী হল, এই অসম্মান লজ্জাজনক ব্যাপারটায় !