কবিতা- ঘুরে দাঁড়াও

ঘুরে দাঁড়াও
– সোমা কর্মকার

“নারী” তুই জন্মেছিস কি কেবল পরের ভালোর তরে,
নিজের ভেবে মিছে বড়াই, তুই কেন করিস তবে?
না ছিল কখনও তোর কোনো ঘর, না কোনোদিন হবে!
সবাই যতটুকু খোঁজে তা যে শুধুই প্রয়োজনের তরে।
জন্মে থেকে পালিত হলি যে ঘরে যে মায়ের কোলে,
বিয়ের পরে তাদেরকেই যে ফেলে চলে যেতে হবে।
সব ভুলে তখন আপন করবি শ্বশুর ঘরের লোককে,

সেখানে আবার চলতে হবে তোকে সবার মন জুগিয়ে।
নিজের খুশি বির্সজন দিতে হবে অন্যের ভালোর তরে।
তখন তো আবার বাপেরবাড়ি আর শ্বশুরবাড়ি হবে!
এর মধ্যে কোনটা রে বল, তোর নিজের বাড়ি তবে?
নারীদের নিজের বাড়ী বলে আসলে কিছুই হয় না রে!
মাঝে মাঝে তাই অনেক প্রশ্ন জাগে আপন মনে মনে,
নারী নামক বস্তুটির আছে কি কোনো যোগ্যাধিকার?
চিরজীবন নারীরা হয় যে শুধু অন্যের লালসার বলি,
জায়গায় বিশেষে আবার বিভিন্ন রকম যে তার চিত্রটি।
সারাজীবন সবেতেই যে করবি শুধুই অ্যাডজাস্টমেন্ট,
বিনিময়ে পাবি রে তুই কেবল নানা রকম পানিশমেন্ট।
আপণ ভেবে যাদের তরে করবি তুই নিজের প্রাণপাত,
সবশেষে তারাই ভুল প্রতিপন্ন করবে তোকে দিনরাত।
এই নারীর গর্ভেই ভূমিষ্ঠ হয়ে নারীকেই করে ভূ লুণ্ঠিত,
শত নারীর রক্ত ক্ষতে আছে সেই সব ইতিহাস বর্ণিত।
সবই যেন শুধু মরুভূমির মত তপ্ত বালিতে জল ঢালা।।
সবাই যদিও খারাপ নয় কিছু মানুষ ব্যাতিক্রমও হয়।
তবে বে‌শির ভাগ মানুষই ভাবে নারী যে অতীব নগণ্য,
তাই তো নারীরা বারবার হয়ে ওঠে শুধুই ভোগপন্য।।
একবারও মনে পড়েনা কার মাধ্যমে ধরণীতে আগমন,
মনে পড়েনা নিজের বাড়ি কিংবা অতীতের সব কথা?
কিন্তু এভাবেই কি সারাজীবন চলতে পারে বলতো??
অনেক তো হল মুখ বুজে সওয়া, এবার ঘুরে দাঁড়াও!
জানুক সবাই নারীরা প্রয়োজনে অস্ত্র ধরতেও জানে,
অত্যাচারিত ব্যভিচারী আসুরকে হত্যাও করতে পারে।
ইচ্ছে করলে একলহমায় ভয়ংকর প্রলয় ঘটাতে পারে।

সেদিনসবে বুঝবে তবে নিরবতা সবসময় দুর্বলতা নয়।

Loading

Leave A Comment