ভালোবাসার ভুল
– জ্যোৎস্না ভট্টাচার্য ত্রিবেদী
মা গো…
ঘন মেঘের আস্তরনে ঢাকলো সেদিন চাঁদ
নিশুত রাতে বনের মাঝে পাতলো ওরা ফাঁদ।
সেদিন আমার ঘর পালানো ছোট্ট সুখের নেশা
সেই নেশাতেই পাগল আমি,পাইনি তো আর দিশা।
বনের মাঝে বুনো ফাঁদে জড়াই মনের ভুলে
ভালোবাসার কি যন্ত্রনা, উঠলো ভূবন দুলে।
রাত জাগা চাঁদ রাতের শেষে মলিন হলো যবে
অকাল সে ঘুম ভাঙ্গলো আমার,প্রভাত তখন হবে.
নতুন প্রভাত নতুন আলো নতুন মানুষ আমি
সব হারানোর ব্যাথায় কাতর কি করি না জানি।
ঘরে ফেরার বন্ধ দুয়ার, নতুন ঘরও হয়নি চেনা
ফিরবো কোথায়! দুনিয়াটাইতো লাগে ভীষণ অজানা।
বনের মাঝে বসে ভাবি, কোথায় হলো ভুল
ভালোবাসার এমন সাজা, হারালাম দুই কূল।
মনে পড়ে মায়ের কথা, কতো সাবধান বানী
তুচ্ছ সে সব করেছি হেলায়, যেন সবই জানি।
বাবার শাসন, কাকার বকায়, ছিলো ভীষণ রাগ
আর কেউ আজ বকবেনা তো লাগিয়েছি যে আগ।
নিজের জ্বালা আগুনে আজ নিজেই ঝলসে মরি,
মরন কি আর এতোই সোজা, আসবে তড়িঘড়ি?
মরতে যে চাইনা মাগো, বাঁচতে আমি চাই
একটু খানি জায়গা কি মা হবে না মোর ঠাঁই..!
এই কলঙ্ক মাথায় নিয়ে কেমনে যাবো বল..
পারবি কি মা সবাইকে আজ ভোলাতে করে ছল..!
সেই যেমন ছোটো বেলায় বাবারে বুঝিয়ে ভুল
নির্দোষ আমায় করতি প্রমান,আমি তো নির্ভুল।
পারবি কি মা আজ ও তেমন সবারে বোঝাতে
আমার কি দোষ ছিলো বল, শুধুই ভালোবাসাতে..!
আমি যে মেয়ে, তাই বইতে হবে প্রেমের এই কলঙ্ক;
যে ছেলে এই কালি দিলো সে তো নিষ্কলঙ্ক..!
কি করি মা বলনা এখন, কোথায় আমি যাই…
বসন খানিও এমন ছেঁড়া, লজ্জা ঢাকা দায়..!
তবে কি মা তোর মুকুলিকা মুকুলেই শেষ হবে?
ফুল হয়ে ফোটার আগেই পোকায় কাটলো যবে…
তখনই তার নিয়তি যে স্থির হয়েই গেলো
মরণ বিনা গতি নেই আর,সবই শেষ হলো।
মরণ রে তুহুঁ মম শ্যাম সমান…
ক্ষমা করো মা
তোমার হতভাগী…