পেন্নাম বাবুরা
– সুজিত চট্টোপাধ্যায়
কী বলবো বলুন তো?
না না, নতুন কিছু না, বিশ্বাস করুন টিভি বাবুরা,
অনাহার কিংবা আধপেটা…
জলতেষ্টায় ছাতি ফাটা…
ছাওয়াল টাকে কাঁধে তুলে
কোরোশ পেরিয়ে হেঁটে চলা…
আকাশের নীচে ডাগর মেয়ের
ভয়ে কুঁকড়ে আধঘুম রাত…
পোয়াতি বউয়ের ঝোপের আড়ালে
ককিয়ে ওঠা প্রসব বেদনা!
না না, বিশ্বাস করুন, নতুন কিছু না।
দুঃখিত টিভি বাবুরা, কত কষ্ট আপনাদের,
ঝড়বাদলের দাপটে, ক্যামেরা কাঁধে ভাঙা ঘরসংসারের লণ্ডভণ্ড ছবি তোলা। তুলুন..
ছবি বৈ তো কিছু না, যতখুশি তুলুন ।
কিন্তু না গো, বিশ্বাস করুন, নতুন কিছু না,
জন্মে ইস্তক এইভাবেই, অভ্যেস গো বাবুরা।
হ্যাঁ, গেছিতো, শহরের মিটিংয়ে, অনেক বার।
হেলিকপ্টার ফটফট করে ভোট বাবুরা আসে যে
যাওয়া থাকা খাওয়া, একদম বিনি মাগনা।
না না…এসব নতুন কিচ্ছুই না, গা সওয়া।
হ্যাঁ, কান্না পায় বৈকি, কাঁদি, আবার বাঁচি।
টিভি বাবুরা, তবে বলি শোনো,
আমাদের এই ভাঙাচোরা ছেঁড়াফাটা অনাহারী
মুখগুলো টিভিতে বারবার দেখিয়ে দেখিয়ে
তক্ক বিতক্কে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে চিৎকারে ফাটিয়ে,
যদি আখেরে কিছু লাভের মুখ দ্যাখো তোমরা,
হ্যাঁ, তোমরা, ধুমসো ক্যামেরা কাঁধে টিভি বাবুরা…
তবে প্রাণ ভরে বারবার দেখিও, ক্ষতি নেই ।
জানি তো, সে সবই তেজ মাখানো আয়েসি কথা।
চায়ের সাথে জমবে জবর।
কিন্তু না, আমাদের নতুন কথা কিচ্ছু নেই
সবই পুরাতন, ঝুল কালি মাখা তোবড়ানো কথা,
যাহাই বাহান্ন, তাহাই তেপ্পান্ন।
বুঝলে সাংবাদিক বাবুরা, এবার যাও দেখি,
পাঠশালায় নামতা আওড়ানোর মতো করে
ঠাণ্ডা ঘরে বসে তারস্বরে খবর পড়ো।
আমরা এখন আবার নতুন করে ঘর বাঁধবো।
বাঁচতে হবে যে..
আবার এসো কিন্তু খবরের বাবুরা,
ভোট এলে, কিংবা ঝঞ্জায়, পেন্নাম।
দারুণ লিখেছেন খবরের মোড়ক ও ব্যবসায়ীদের কথা
শুভকামনা
সত্যি এগুলো নুতন কিছু না। দারুণ লিখেছেন কবি।
শুভকামনা