“ভালোবাসা ডট কম”
– উজ্জ্বল সামন্ত
সদ্য কলেজে পাস করা আবিরের উড়ু উড়ু ভাব। কলেজের সোস্যালে মন জয় করে নেয় তার শিল্পকলায়, গানে। গান গেয়ে তার অনেক ফ্যান হয়েছে। আবির ব্যস্ত থাকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট, অ্যপে। ইউটিউব চ্যানেলে তার অনেক ফ্যান ফলোয়ার্স। ফেসবুকে ও তার বন্ধুর সংখ্যাও বাড়ছে।
বাবার দৌলতে একটি সরকারি চাকরি জুটে যায় আর্ট কলেজে। কিছু মাস পর আবিরের বিবাহ হয়। বিবাহ এক বছর অতিক্রান্ত। অবসর সময়ে বাড়িতে থাকাকালীন আবির ফোন, চ্যাট এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকে। স্ত্রীর বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে এক সময়। স্ত্রী’র (প্রিয়া) মনে হয় স্বামীর কাছে সে কি পুরনো হয়ে গেছে? কিন্তু কিছু মুখে বলে না।
ফেসবুকের মেসেঞ্জারে একদিন একটি ছোট্ট বার্তা আসে। কেমন আছো? চিনতে পারছো? প্রোফাইলে ডিপি নেই। আবির রেসপন্স করে না। দিনের-পর-দিন মেসেজটি আসতে থাকে। এবার সত্যিই আবির চিন্তায় পড়ে, কে? প্রোফাইলে নাম লেখা প্রেয়সী ! এই নামে তো কাউকে চেনে না আবির। এবার একদিন মেসেঞ্জার কল, আবির রিসিভ করে দু’একটি কথা বলে, কিন্তু গলাটা?
চেনা চেনা লাগছে না। হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার আদান-প্রদান হয় নি। প্রেয়সী মাঝে মাঝে মেসেঞ্জার কল করে, ছয় মাস অতিক্রান্ত হতে চললো আবির বহুবার জিজ্ঞেস করে মেয়েটি তার আসল নাম ঠিকানা জানায় নি। প্রেমালাপে আবির আস্তে আস্তে মেয়েটির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।
সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আবার প্রেম হয় নাকি? আবির বিবাহিত, মনে মনে হাসতে থাকে। মেসেঞ্জারে হঠাৎ নিজের খেয়ালে প্রেম নিবেদন করে। হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার চায়। মেয়েটি তখন বাইরে তার সঙ্গে দেখা করতে চায়। একদিন সন্ধ্যায় রেস্টুরেন্টে আবির অপেক্ষা করে। স্ত্রীকে ফোনে বলে বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে আছে, দেরি হবে বাড়ি ফিরতে।
সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে, দু’কাপ কফি অর্ডার করে খেয়ে ফেলেছে একা আবির। হরেক রঙের গোলাপের তোড়াটা পাশে রাখা। কিন্তু প্রেয়সীর দেখা নেই। হঠাৎ পিছন থেকে হাত দিয়ে আবিরকে কেউ যেন চোখ ঢাকে। স্পর্শে চকিত হয়ে, আবির জিজ্ঞেস করে প্রেয়সী? তখন মেয়েটি হাসে। এই হাসি যেন তার চেনা। আবির দেখে টেবিলে তার স্ত্রী বসে আছে…