কবিতা- পেহেলগাঁও

পেহেলগাঁও
– উজ্জ্বল দাস

 

 

কি যেন নাম,
একটা কাঠের ছোট্ট পারাপারের সেতু,
ঠিক, কল্পনায় যেমনটা ভেবেছিলাম।
চারদিক সবুজের চাদর মোড়া,
গাঢ়- ঘন- কচি কলাপাতার আস্তরণে ডুবে।
সামনেই আমাদের চালা ঘরখানা।
তারও গায়ের রঙ সবজে।
কি যেন নাম জায়গাটার।
স্মৃতির বিস্মরণে ভুলতে বসা দুহাজার কুড়ি।

ছোট্ট কাঠের সেতুটাই যে সব, আজ বুঝতে পারি।
নীচ দিয়ে বিন বিন করে এঁকে বেঁকে বয়ে চলছে-
নাম না জানা, এক ফালি পাহাড়ি নদী।
অনতি দূরে সশব্দে পড়ে চলেছে ঝর্ণার জল-
সেতুর গায়ে হেলান দেওয়া আমি,
কাঠের হাতলটা ধরে ফিরে গেছি-
কুচকুচে কালো চুলের বয়সে।
খুব সন্তর্পণে পা ফেলছি, আবার বিচ্যুতি না ঘটে।
আবার না হারিয়ে ফেলি তোকে।

কানে কিন্তু বেজে চলেছে জলধ্বনি,
কুমারী ঝর্ণার- পরিচিত উচ্ছাস, রিন্-রিন্- রিন্।
জল চলকে এসে ঠেকছে পায়ে, গায়ে, সারা মনে।
আজ পূর্ণিমা, ঢলে পড়বো ষোড়শী চাঁদের কলঙ্কে,
একটু জোৎস্না মেখে নেবো, সেতুটাই যে ভরসা,

আর তুই যত্ন করে আমার হাতটা ছুঁয়ে দিয়ে বলবি
“এই তো আমি।”

মনে পড়েছে। হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে…
পেহেলগাঁও, পেহেলগাঁও নামটা।
পেহেলগাঁও- পেহেলগাঁও – পেহেলগাঁও।
গায়ে হাতটা না দিলেই তো পারতিস।
ঘোরটা কেটে গেলো,
শব্দ করে ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলো,
খান খান হয়ে চুরমার হয়ে গেলো।
এরকম ভেঙে চুরে ভালোবাসতে পারলাম কই -তোকে।

ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলোর ঝন ঝন আওয়াজ,
প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো-
ঝর্ণার ছিটকে পড়া জল কণার গায়ে।
দুলে উঠলো কাঠের সেতুটা, ধর ধর আমায় ধর-
আমি যে পড়ে যাচ্ছি।

তুই যত্ন করে আমার হাতটা ছুঁয়ে দিয়ে বললি
“এই তো আমি।”

তুই মিলিয়ে গেলি চাঁদের কলঙ্কের গায়ে।
ধীরে ধীরে।।

Loading

One thought on “কবিতা- পেহেলগাঁও

Leave A Comment