অসির গর্জন
-সুমিতা পয়ড়্যা
তুমি সেদিন আমার হাতেই কলম দিয়ে বলেছিলে-এটা তোমার;
তখন বুঝিনি এই কলমকে সঙ্গে নিয়েই চলতে বলেছ।
তোমাকে, তোমার তুমিটাকে আর কোনদিন পাব না!
পেলামও না।
সেই কলমই আজ গর্জে ওঠে, কথা বলে।
ছিন্ন বন্ধনকে টেনে আনে কাব্যের মোড়কে;
এই ছিল তোমার মনে
বুঝিনি, বুঝতে পারিনি!
চারদিকে গভীর অন্ধকার গ্রাস করে ফেলবে,
ভালোবাসার বেড়িতে বদ্ধ কারাগারে প্রবেশ করতে হবে,
বুঝিনি তখন জীবনের ছন্দ, গন্ধ,
গুমরে গুমরে কান্নায় মোড়া টকটকে লাল রক্ত গোলাপটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে ঝরে যাবে;
বুনেছিলাম এক পৃথিবীর রঙিন আঁকা সব স্বপ্নগুলো।
ভালোবাসার গোপন ঘরে আমার ভালোলাগা গুলোকে বুকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে থাকি।
যে নড়বড়ে সাঁকোটা দুলে ছিল সেদিন
বোঝার আগেই দুজনে দুপাশে ছিটকে পড়লাম।
জল থেকে উঠলাম ঠিকই!
তবু কেউ কারুর হাতটা ধরতে পারলাম না।
সেই মুহূর্তকালে মুখের হাসিটা কেমন যেন তরবারির আঘাতের মত ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল,
বিদীর্ণ করেছিল হৃদয় প্রকোষ্ঠকে,
ঝর ঝর করে ঝরে পড়া রক্ত প্রলেপ দিল ভালোবাসার ঘরে।
সেদিন মানুষের মুখের আড়ালে মুখোশের এক ভয়ঙ্কর গন্ধ আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল।
সব স্বপ্নগুলো কেঁদে কঁকিয়ে বলে উঠেছিল- চাইনা চাইনা এমন পৃথিবী!
এত মিথ্যা, এত অপরাধ, এত রক্তাক্ত জীবন,
এমন বন্দী জীবন; এমন দাসত্বের জীবন,
এমন সংগ্রামের জীবন চাইনি তো কখনো!
পৃথিবীর আগামী সত্যকে উপলব্ধি করে যে কলম তুলে দিয়েছিলে আমার হাতে
আজ সেই অসিতেই ছিন্নভিন্ন হৃদয়ের সকল সত্যকে তুলে দিয়েছি বিশ্বমানবের জনজোয়ারে।
শখের জীবনের পাতায় আর কিছু লিখতে পারবে না।
ওই ধূমকেতুর মতোই একই আকাশের এখানে সেখানে ছুটে বেড়াতে হবে।
বেড়াতে হবে স্বাদহীন মুক্তির আকাশে।