কবিতা- বিষাদের রঙ

বিষাদের রঙ
– সুমিতা পয়ড়্যা

খুঁজে পেলাম–
বিষাদের হরেক রকম রঙ,
ওই যে কান্নাভেজা বালিশটি
তার রঙ সোঁদা মাটি–
তা না হয় ধরিত্রীকে দিলাম।

ওই যে কাঙ্গাল ভিখারি
শুধু ভালোবাসা খুঁজে বেড়ায়
তার রঙ আগুন;
যে শুধু হৃদয়কে পোড়ায় প্রতিক্ষণে,
আগুন তুই ফাগ বসন্তেরই থাক!

ওই যে বিষন্ন মন–
তার রঙটা ঠিক যেন ধূসর!
ওটা আকাশ তোকেই দিলাম।
ওই আলো-আঁধারির সম্মোহিনী রূপ
ওখানেই যে ধূসর কে ভালো মানায়।

ওই যে উন্মাদিনীর, পাগলিনীর চঞ্চলতা
যে শুধু ভালোবাসার আবেগে ভাসতে জানে!
তোকে কোন রঙটা দিই বলতো?
হ্যাঁ, হ্যাঁ! নীলটাই তোর জন্য সঠিক,
অনেক কল্পনার জালে নিজেকে ধরে রাখিস,
তুই বরং কবির কলমেই থাক।
না বলা শব্দরা নীল কল্পনায় নীলাম্বরীর সাজে থাকতে পারবে!

আর ওই যে কালো রঙটা,
চুপিচুপি নিস্তব্ধ রাতে প্রবেশ করে
চারিদিক অন্ধকারে কালো রঙটা কেমন যেন প্রগাঢ় হয়ে ওঠে।
তোকে আর কার কাছে রাখবো!
এমন নীরব নিশ্চিত ভয়ঙ্কর মৃত্যুর প্রতীক;
তুই বরঞ্চ অভিযাত্রী হয়ে রাত্রির কাছে যা ।
সেখানে তুই ভবিষ্যতের কথা বলতে পারবি।

এই যে আমার শ্যাওলা সবুজ রঙ
চাতকের মত অপেক্ষা করে থাকিস;
সময় কত দ্রুত বয়ে যায়
তা যদি তুই জানতিস!
অপেক্ষমান তুই ইতিহাসের ঘরেই যা।
ওখানে তুই অতীত বর্তমানের কথা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে আঁকতে পারবি।

বিষন্ন বিষাদের হরেক রকম রঙ–
লাল, হলুদ, আসমানী, কমলা, বেগুনী
আরো কত যে রঙ!

এত রঙ যে বয়ে বেড়াবো সে ক্ষমতা অস্তিত্ব আজ আর নেই।
জীবনের সব বিষাদের রঙগুলো মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
তাইতো সাদা পাতা সাদাই থেকে গেলো,
অন্তরের বিষাদের হরেক রকম রঙের ব্যাখ্যা দিয়ে
হয়তো বা কবিতা লেখা যায়; হয়তো বা নিজেকে আচ্ছন্ন করে রাখা যায়,
কিন্তু আর আঁকা যায় না।
হরেক রকম কাটাকুটি করতে করতে সাদা পাতাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে কখন!
নিভৃতে স্মৃতির ঘরে সাদা রঙ সুখ স্বপনে শান্তি খোঁজে বোধ হয়।!

Loading

Leave A Comment