স্বাধীনতা কত মজা
– সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়
মাঝ রাতে গল্প ফিস্ ফিস্ ফিস্,
আগষ্ট পনেরো সাল সাতচল্লিশ।
দেশ পেল স্বাধীনতা ভারী মজা তার,
বাড়ি চিরে চলে গেল মোটা কাঁটাতার।
গোয়ালটা বিদেশে রামু দেখে ভোরে,
পাসপোর্ট নাই, দুধ দুইবে কি করে?
গোপালের আরও মজা থাকে বনগাঁয়,
চাকরি করতে রোজ বরিশালে যায়।
স্বাধীনতা পেয়ে ভারী আনন্দ তার,
চাকরি বাঁচাতে রাতে ইছামতি পার।
আব্দুল মিঁয়া বুঝি কত খুশি হলো,
ভিটেমাটি সব ফেলে ভিনদেশে গেল।
মেয়েটা যে হাত খুলে কোথায় হারালো?
পেল তার ছেঁড়া শাড়ি,আরও খুশি হলো।
আনন্দ ধরে না যে সুবোধের মা’র,
ছেলে থাকে লাহোরে, ফিরলো না আর।
ট্রেনে বাসে ঠেসে ঠুসে হাজারে হাজারে,
মানুষ যায়, না পশু, বলতে কে পারে?
সব গেছে তবু খুশি বেঁচে আছে শ্বাস,
চেয়ে দেখ চারিদিকে কত পচা লাশ।
ধর্ষণ রাহাজানি আরো কত হলো,
দেশবাসী তবু খুশি স্বাধীনতা পেল।
জনগন ভারী সুখী পেয়ে স্বাধীনতা,
নেতা মরে ভাবনায় ফাটে বুঝি মাথা।
ইংরেজ দিলো এত বড়ো দেশটা-রে,
মাথায় আসে না এরে চালাবে কি করে।
কোট টাই পড়ে বুকে গোলাপ সেঁটে,
তাই নিল দেশটাকে ভাগ করে কেটে।
যারা গেল ফাঁসিকাঠে গুলি খেল যারা,
নেতা ভাবে দুর দুর মহা বোকা তারা।
স্বাধীনতা আসে না কি গোলাগুলি ছুঁড়ে?
পাওয়া যায় সহজেই তোষামোদ করে।
জনগন খুব খুশি আধপেটা খেয়ে
সত্তর পার করা স্বাধীনতা পেয়ে।