পাতাবাহার
– সঞ্জিত মণ্ডল
ফাঁদ পাতা এই দুনিয়াটাতে সবই পাতাবাহার-
কেউ বা আহার করে সে পাতাতে পাতাই কারো আহার।
বিছুটি পাতাটি ঘষলে গায়েতে চোরেও কথা বলে-
কাঁঠালের পাতা খেয়ে দেখি ছাগ লাফিয়ে লাফিয়ে চলে।
চিনিপাতা দই স্বাদে ষোল আনা সে কথা সবার জানা-
আড়ি পাতা কভু রসে মজে যায় ফুলশয্যায় হানা।
নিমপাতা খায় ওষধি গুণেতে মড়াকে পুড়িয়ে এলে-
আলুভাতে আর নিম শিম হলে ভাজা শুধু ভাতে চলে।
তুলসীপাতা তো পুজোতেই লাগে চিবিয়েও খাওয়া যায়-
মুখে বুকে গলে জিভেও দাঁতের কতোনা ব্যাধি পালায়।
কারিপাতা লাগে ডালের ফোড়নে তেজপাতাটাও দেয়-
দু’টো পাতাতেই অশেষ গুণ সে জানুন মহাশয়।
কলাপাতা আর লাউপাতাতেও ইলিশ পাতুরী হয়-
ভেটকি মাছের বাহারী পাতুরী দু’টো পাতাতেই হয়।
লাউয়ের পাতা পালং পাতা কনকে নটে যতো-
দুখের দিনে নয়কো শুধু সুখের দিনেও চাখো।
বেল পাতাতে পুজো হবে তাই এটা সকলের জানা-
সে বেলপাতাটি চিবিয়ে খেলেও ওষুধটা হবে কিনা।
পান পাতাতে লজ্জা ঢাকে নতুন বউয়ের মুখ-
খাবার পরে চিবিয়ে খেলে হয় ভোজনের সুখ।
খাতার পাতায় সবাই লেখে বিদ্যা পরিচয় –
চোখের পাতা জড়িয়ে আসে ঘুমান মহাশয়।
মনের পাতায় চিরকালই স্মৃতি জমে থাকে-
ব্যাংকে খাতা খুললে পাতায় সুদও এসে থাকে।
গোল করলে খাতা খোলা রান করলে তাই-
জীবন খাতার প্রতি পাতায় হিসেব লিখে যাই।
কচুপাতায় জলের মতন জীবন নড়েচড়ে –
ফাঁদপাতা এই দুনিয়াটাতে সবাই ধরা পড়ে।
জাবদা খাতার পাতায় বা হোক খেরো খাতার পাতা-
এমনি খাতার পাতায় যতো হিসেব নিকেশ করা।
আলতা পাতা কানের পাতা পায়ের পাতায় কি –
হাতের পাতায় পাতাবাহার মেহেন্দি করেছি।
হাত পাতা দোষ অনেক আছে কান পাতা দায় হয়-
গাছের পাতায় হরেক প্রাণী বাসা বেঁধে রয়।
পাতার আমি পাতার তুমি জামপাতা হয় গুণী –
পিয়ারাপাতা ঘৃতকুমারী পাতার মধ্যমণি।
কলমী পাতা হিঞ্চে পাতা কতো যে নাম করি-
পাতাবাহার কাব্য লিখে খাতার পাতা ভরি।।