অণু গল্প

অণুগল্প- স্বপ্নপুরণ

স্বপ্নপুরণ
– রাণা চ্যাটার্জী

 

 

চৌরাস্তা মোড়ে ভিক্ষা পাত্র নিয়ে বসা ছেলেটাকে ভীষণ ধমক দিয়েছে আজ অয়ন। “এই হাত পাতা কেন রে, বাজে অভ্যাস-কাজ করে খেটে খেতে পারিস না!”

আজও বাবা বাড়িতে তুমুল চিৎকার শুরু করেছিল। মাকে শুনিয়ে বললেও উদ্দেশ্য যে অয়নকে ধাক্কা দেওয়া বেশ বোঝে সে। “তোমার লাডলাকে বলো বাপের হেঁসেলে আর নয়, চেষ্টা করুক, এত স্বাধীনতা ভালো নয়! “কথাগুলো যখন খোঁচা দেয় আরও অস্থির হয়ে ওঠে। চেষ্টা কিন্তু অয়ন করছে একটা ভালো কাজ যা তার বিবেককে পরিশ্রুত রাখে মাথা উঁচু রাখতে সাহায্য করে নাহলে এত পড়াশোনা সে করলোই বা কেন যদি দোকানে খাটতে হয়।

কখনো কখনো রেগে যায় মা, “উফ তুমি এবার একটু থামবে-ছেলেটা খেতে বসলেই শুধু বাজে বাজে কথা। তুমি বাবা নও যেন একটা পিশাচ!”

আবার একটা স্বাধীনতা দিবস, টিভিতে নেতার উন্নয়ন ফিরিস্তি কিচ্ছু ভালো লাগে না অয়নের।
অন্যরকম কিছু যদি করা যায়, ভেবেই সকালে হাজার পিস মাস্ক কিনে এনেছে পাইকারি দামে ১২০০টাকায়। পাঁচজনকে টার্গেট করে একটু একটু করে সৎ পথে উপার্জন করার খিদেটা জাগিয়ে তুলেছে। ভিক্ষা নয়, কাজ করে সম্মান আদায় অনেক বেশি স্বাধীনতার এটা বুঝছে ওরা।প্রতি মাস্ক ৩ টাকা লাভে সরবরাহ করছে অয়ন।আরো কিছু ছেলে মেয়ে যোগাযোগ করেছে ইতিমধ্যে, যারা বিক্রি করতে রাজি। অয়নের ইচ্ছা ভিন্ন অথচ চাহিদা যোগ্য জিনিস সময়ের সাথে সাথে এদের হাতে সরবরাহ করে। এমন ভালো কিছুজনকে ইতিমধ্যেই অয়ন তার বিক্রেতা টিমের অন্তর্ভুক্ত করার কাজে নেমে রীতিমতো সাড়া পেয়েছে। অয়ন বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যাদের পেটে খিদে আছে, চোখে আছে স্বপ্ন তারা অন্তত ভালভাবে বাঁচুক কাজের মধ্য দিয়ে। যদি তারা বিক্রি করতে পারে হাত পেতে ভিক্ষা চাওয়ার থেকে এ পথ অনেক সম্মানের। এর ফলে এদের পরিবার যেমন বাচঁবে অয়নেরও স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নপূরণ ।

Loading

One Comment

Leave A Comment

You cannot copy content of this page