অণু গল্প

অণু গল্প- তবু আনন্দ জাগে

তবু আনন্দ জাগে
– উজ্জ্বল সামন্ত

 

 

বস্তির ছোট্ট মেয়েটি শিউলি (১২ বছর) রাস্তার ফুটপাতে ফুল, মালা, বেলপাতা নিয়ে বিক্রি করে বস্তির সামনের বড় রাস্তায়। শিউলির বাবা হকারি করত ট্রেনে। মহামারীর আতঙ্কে ছয় মাস হল সব বন্ধ। ওর বাবা দিন মজুরের কাজে প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে যায়। প্রায় দিন খালি হাতে ঘরে ফেরে লকডাউনে সেরকম কাজ কর্ম নেই। মা পাঁচজনের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতো কিন্তু লকডাউনে তাও বন্ধ। শিউলির এখন ইস্কুল বন্ধ তাই ওর খুব মজা। সকাল হলেই পাড়ায় পাড়ায় বিভিন্ন গাছের ফুল তুলে মালা গেঁথে বেরিয়ে পড়ে ওদের বস্তি থেকে বড় রাস্তার মোড়ে। হঠাৎ একদিন বিকেলে শিউলির মা ওকে ও ছোট্ট ভাইকে নিয়ে রাস্তার ধারে একটি বড় দোকানে যায়। দোকানে খুব ভিড়, ওদের পোশাক দেখে সিকিউরিটি ঢুকতে দেয় না। দোকানের মালিক ব্যাপারটি লক্ষ্য করে। লোক মারফত একটি শাড়ি, একটি ফ্রক, বাচ্চাটির জন্য একটি জামা দিয়ে পাঠায়। শিউলির মা আত্মাভিমানী। গরীব হতে পারে কিন্তু কারো কাছে কোনোদিন হাত পেতে কিছু নেয়নি। জিনিসগুলো ফিরিয়ে দেয়। এবার দোকানর মালিক ওদের ভেতরে ঢুকতে দেয়। কেনাকাটা করে দাম দিতে গেলে দোকানের মালিক খুব আশ্চর্য হয়ে ওদের তিনজনের দিকে তাকায়। শিউলির বাবা সন্ধ্যায় ফিরে নতুন জামা কাপড় দেখে চমকে যায়। তখন শিউলির মা শিউলির ফুল বিক্রি করে রোজগারের কথা জানায়। আনন্দর রোজগার সেরকম নেই, তাই ছোট্ট ছেলে, মেয়ের ও স্ত্রীর জন্য কিছু কেনাকাটা করতে পারেনি দুর্গোৎসবে। মেয়ে শিউলির এই কাজে আনন্দে দুচোখের কোণে কিছু চিকচিক করে…

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page