নদী জীবন
– দীপঙ্কর বিশ্বাস
নদীর মতো মনে হয় যাকে
তার খাতে চড়া আছে,
সবুজ ঘাসের বুকে চড়ুইভাতীতে
ফুর্ত্তিবাজদের আড্ডা বসে।
নাচে বুকে
নাচে শরীর ভাঁজে ভাঁজে।
এমন স্রোতোস্বিনীর
বুক দেখি রোজ গিয়ে !
নির্লোভ সে স্রোত
তাও নদী খুব ভালোবাসি।
অগাধ জলে কখনো হাঁটু জলে সাঁতরাই
সময় রেখা ছিঁড়ে স্নান করি
এক নদী ছেড়ে আরেক নদীর বুকে।
সবুজ বন্য ঘাস গুচ্ছমূল-গুল্ম
উলঙ্গ লতায় আরষ্ঠ গতরে
অবিন্যস্ত হরেক আঁশটে গন্ধ —
ডুব দিই আগুন নেভানো জলে।
নাভি ছিঁড়ে পাহাড় ঠেলে মেয়েটির জন্ম!
অযত্নের সজল ধারায় নেমে আসে
হাসি খেলা উচ্ছাসের এক অনাবিল ছন্দ।
গর্ভধারিণীর মতো কোমল
মেয়ে যৌবনে যত উচ্ছ্বাস লাজ
ভরা বর্ষার এক ছবি।
মাটির মুর্তির মতো ভেঙ্গে ফেলে আজ
অসুন্দর কুৎসিত গড়ে তুলি।
পলিপড়া সমাজে সাজান গোছান
শুধুমাত্র মেয়ে তুমি
বান আনো যখন
একুল ওকুল দুকুল ছাপিয়ে।
নদী সৃষ্টির গর্ভ
শুকিয়ে গেলে সব এলোমেলো লাগে।
মেয়ে থামলে না কখনো-
কলঙ্ক বোঝা বয়ে ঢেউ হয়ে যাও!
রেশমি চুড়ির মত সয়ে যাও
নদীর বুকে নগ্ন রূপে মানুষ বাঁচে তাও!
নর্দমার বিষ দাগ দেখে
আমি মাঝি তোমার বুকে
পার করি পার হই নিজে
মেয়ে মানুষের ভালোবাসার স্রোতে!
নদীর বারেবারে ভালোবাসায়
মায়ের আঁচল তাও!
উর্বর এ জন্ম
তৃপ্তির একমাত্র পছন্দ কামনার শরীর তাও।
সাগরের ঢেউয়ের অপেক্ষায়
এ যন্ত্রণা কি করে সয়ে থাকো!
কলুর বলদ যেমনি-
ও মেয়ে
নিজেকে কেন যে বাধ্য করো
অস্তিত্ব বিলিন পথে!
নিজের ভাবনায় জেগে ওঠা অস্থির নদী-
যে নামে তোমায় ডাকি
সেও হয়ে উঠেছে স্রোতোস্বিনী।