গলওয়ান ধারা
-অমল দাস
দূরবর্তী শ্মশানের মতন মৃত শহরে দীপ জ্বলে,
হুতুমের ডাক সহজে শোনা যায়না। তবুও-
শব্দ তরঙ্গ, কড়ঙ্গ নিয়ে নিশ্চুপে কীর্তন গেয়ে যায়
শহর থেকে শহরের তলপেটে।
‘জাগতে রহো’-র দল জেগে জেগে কবে যেন
মিশে গেছে গলি পথে হলুদ ঘাসের’পরে,
হেমন্ত শিশিরের ঘ্রাণেও ফিরে আসেনি আর!
যারা জেগে ছিল নবীন নুড়ির চরে,
সমুদ্র সফেনের মত বরফের চাদরে,
সবুজের নিবিড় আবরণে আকাশের তলে অপলক
তেমনি কতেক তারা নেমে গেছে পাহাড়ের গা বেয়ে
পাথরের পাহারা ভেঙে আততায়ীর ঘায়ে।
গতরাতে কিশোরী গলওয়ান হাঁটু গেড়ে কেঁদেছিল
একা শবের উপত্যকায়।
সারারাত ভেসে এসে তর্পণের ঘাটে নোনা জল ব্যথা লেখে
পূবে ওঠা সূর্যমুখী হাতের তালুতে।
উত্তুরে হাওয়া বিবাদ বিষাদ নিয়ে আলুথালু ঘোরে
দরবারী দ্বারে- নগরীর কপাটে- গ্রামের ভিতরে।
আমরা ঘুমন্ত হৃৎপিণ্ড নিয়ে জেগে উঠি
আগ্নেয় লাভার মত ছড়াতে চাই অসম্পূর্ণ মানচিত্রে
বিষাদ বরণে সাঁঝের প্রহরে চোখ দিয়ে যত স্রোত নেমে এলো
সেই শোকার্ত ধারা-গলওয়ান নদী ধীরে ধীরে খোয়া যায়
নিশীথের অন্ধ কুঠিতে তর্জার আসরে।