পদ্ম-পাতায় সুখ
– অতীশ দীপঙ্কর
রেখেছি নিজের পদ্ম পাতায় সুখ
মানুষ জনমের গোলাপ ফোটা দুখ।
ভোর হলে মা আমার দরজায়
“বাবু ওঠ” বলে ডাকে-
পৃথক বন্ধনীতে এখন যায় আমার-
অজস্র উদ্ভিজ পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে।
জ্বর কপালে মায়ের হাত আর পাখির কুজন
বারবার আমার হৃদয়ের স্পন্দন।
খোঁজ নেয়–খোঁজ নিয়ে যায়-
টিকটিকি-আরশোলা-কাগজওয়ালা,
মহা সুখী আমি ভেবেছে যে সঙ্গী
সে আমার মহা পৃথিবীর সীমানা।
কেঁচোর খুঁড়ে খুঁড়ে নরম মাটি দিয়ে ভেজানো নাড়া
আমার কোঁচকানো বিছানা বালিশেও চিহ্ন মাখা।
কাঁচের জানালা ভেদ করে রোদ্দুর আসে-
পর্দা গুটিয়ে সরিয়ে দিলে তবে,
ছেলে-ছোকড়ারা গোল্লাছুট ভ্যেটা আর খেলে না
আমার ঘষাকাঁচের জানালার বাইরে,
সামিয়ানা আজকাল বড়ই অসামাজিক রয়েছে
নিকোনো নেই মাটির ঘরবাড়ি
আট-চালায় হ্যাজাক সেই কবে থেকেই নিভে গ্যে
গেছে!
মোমবাতি জ্বালি যখন খুব অন্ধকার লাগে!
গলে গলে –পুড়ে চলে তলানিতে,
ধুপ পোড়া খানিক গন্ধ জীবনে
ডাকে বুকের ভেতর আমাকে ডানা মেলা পাখি।
চলন্ত ট্রেনে ওঠার সময় কিছুটা হলেও ঝুঁকে থাকি
লোকজন নামলে বুঝি এবার গতি থেমেছে,
সুখ যদি থাকে –সে আছে দুরন্ত মতিতে-
পাতায় পাতায় রোদ বৃষ্টি হাওয়ার সাথে।
খ্যাপাটে শূন্যতা আর নৃসংশ বিষাদে
দরজা জানলা খুলে চলে যেতে ইচ্ছে করে।
এক বুক জলে যখন আমার ময়ুরপঙ্খি দোলে
টিপ টিপ বৃষ্টি আসে উদাসী বাউল মনের আদলে-
আমার ভূবন ছেয়েছে গুঁড়ো গুঁড়ো ধুলো
কেউ নেই অন্তত একটি কচু পাতা মাথায় ধরবে!